পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৮
শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত

ঘরে একদিন দেখি সে একদিন একটা ছবিকে ফুলের মালা দিয়া সাজাইতেছে। স্ত্রীলোকটার বয়স কিছু বেশী— সৌন্দর্য্য তখনও রহিয়াছে। আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, ছবিখানি কার? সেই স্ত্রীলোকটী বলিল, উহা শিবনাথ শাস্ত্রীর ছবি। তিনি ব্রাহ্ম সমাজের একজন প্রধান আচার্য্য ছিলেন। আমি বিস্মিত হইয়া বলিলাম “ওহো— সেই শিবনাথ শাস্ত্রী, যাঁর 'নিমাই সন্নাস' কবিতা আমরা স্কুলে কত মুখস্থ করেছি— না—

আজ শচীমাতা কেন চমকিলে,
ঘুমাতে ঘুমাতে উঠিয়া বসিলে?
লুণ্ঠিত অঞ্চলে ‘নিমু’ ‘নিমু’ বলে
দ্বার খুলি মাতা কেন বাহিরিলে?—

বাবার মুখেও এঁর নাম মাঝে মাঝে শুনতাম। তার পর আমি জিজ্ঞাসা করিলাম, “শিবনাথ শাস্ত্রীর ছবি তুমি তোমার ঘরে রেখেছ কেন?” সে বলিল “আমি যখন ১৭/১৮ বৎসরের মেয়ে তখন এক প্রৌঢ়া পতিতা নারী আমাকে আশ্রয় দেয়। তাহার ছোট দুইটী ছেলে ছিল। তাহার প্রণয়ী বাবু তাহাকে একখানি বাড়ী দান করেন। রূপ-যৌবন বিক্রয় লব্ধ অর্থে আত্মপরিপোষণ করবার জন্যই সেই স্ত্রীলোকটি আমায় এনেছিল। সে চাঁপাতলার কোন ছুতারের মেয়ে, ৭ বৎসর বয়সে বিধবা হয়। বিদ্যাসাগর মহাশয় শিবনাথ শাস্ত্রী তাহার পুনঃবিবাহ দিতে চেয়েছিলেন। নানা কারণে তাহা হয়নি। শিবনাথ শাস্ত্রীকে সে বাল্যকালে দাদা বলে ডাকত। অবশেষে ঘটনা চক্রে সে বেশ্যাবৃত্তি অবলম্বন করল। আমি তাহার আশ্রয়ে আবার পর একদিন শিবনাথ