পাতা:শিক্ষিতা পতিতার আত্মচরিত - মানদা দেবী.pdf/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

সপ্তম
সমাজ চিত্র

 বৃন্দাবনে সেই মোহন্তঙ্গী আমায় বলিয়াছিলেন, “অন্নবস্ত্রের দয়া তুমি অনেক পাবে।” তাঁহার কথাটী যে সত্য, এই প্রমাণ আমি জীবনে বার বার পাইয়াছি। দারিদ্র্য হইতে রক্ষা পাওয়া কঠিন নহে— কিন্তু প্রবৃত্তির আক্রমণ হইতে কেহ বাঁচাইতে পারে না। অধিকন্তু সেই রাক্ষসীর গ্রাসে ঠেলিয়া দিবার লোক অনেক আছে।

 রাণী-মাসী এবার আমাকে তাহার নিজের বাড়ীতে লইয়া গেল। সেখানে দোতলায় একখানা ভাল ঘর খালি হইয়াছিল। আমি তখন বুঝি নাই, এই প্রকার দয়ার কার্য্যই আমাদিগকে সর্ব্বনাশের পথে টানিয়া নেয়।

 আমার যে বিদ্যা ছিল, তাহাতে আমি কাহারও বাড়ীতে ছোট ছেলে মেয়েদের পড়াইতে পারিতাম, টেলিফোন আফিসে কাজ করিতে পারিতাম— নার্সের কাজ করিতে— গান শিখাইতে পারিতাম, কিন্তু এই সকল সৎপথে অর্থ উপার্জ্জন করিবার প্রবৃত্তি এবং সুযোগ কেহ আমাকে দেয় নাই। কেবল রূপযৌবনের পসরা লইয়া বাজারে ঘুরিবার দুর্ম্মতি রাণী-মাসী আমার হৃদয়ে জাগাইয়া দিতে লাগিল।