পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/১৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিখ গুরু বা শিক্ষকগণ Ե-Փ পারস্য সৈন্য সাহায্যে, এবং সার্লিমেন অল্পসংখক ফরাসী সৈন্য সমভিব্যহারে রাজ্যের পর রাজ্য জয় করিয়াছিলেন। বাবর রাজ্য-স্থাপনের স্বত্রপাত করিয়া যান ; মুষ্টমেয় তাতার সৈন্য সাহায্যে আকবর সেই রাজ্যের প্রতিষ্ঠা করেন। একিমিনিডিস’ এবং কারলোভিজিয়ান’ দিগের ন্যায়, মোগলদিগের রাজ্যে তেমন স্বশাসন ছিল না ; বাবরের স্বজাতীয়গণের সংখ্যাও অধিক নহে,—এবং তাঁহার পুত্র সিংহাসনচ্যুত হইয়াছিলেন । কিন্তু আকবর বিশেষ রাজনীতিজ্ঞ, বুদ্ধিমান, কৃপালু ও উদার-প্রকৃতি ছিলেন। তাহার দক্ষতা ও সৎসাহসিকতা বিশেষ প্রশংসনীয়। র্তাহার অনুচরগণ সাহসী ও উদ্যমশীল ঠিল। আকবর নিজেও কুটরাজনীতিজ্ঞ এবং অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন ছিলেন। এই সকল কারণে আকবর সমগ্র ভারতবর্ষে আধিপত্য বিস্তার করিতে সমর্থ হন । তৎকালে আকবর লোকের অভাব বুঝিতে পারিয়াছিলেন। অসাধারণ পরিচালনা শক্তি বলে, তিনি হিন্দু-মুসলমানদিগের, রাজপুত,তুর্ক ও পাঠানদিগের পরস্পর-বিরোধী সংস্কার ও ধর্মমতগুলির সমতা বিধান করেন । পঞ্চাশ বৎসর রাজত্ব করিবার পর আকবর র্তাহার উত্তরাধিকারীদিগের ভোগের জন্য একটি বহু বিস্তৃত এবং স্বশাসিত রাজ্য রাখিয়া পরলোক গমন করেন । কিন্তু জাহাঙ্গীরের এক পুত্র রাজ্য লালসায় পিতার সহিত যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয়। পরে, সাজাহান যখন রাজত্ব করিয়াছিলেন, তখন প্রথমে তাহার পুত্রগণ রাজ্যলাভের আশায় পরস্পর যুদ্ধে প্রবৃত্ত হয় ; এবং পরিশেষে এই যোদ্ধৃগণের একজন দক্ষ ও লব্ধ -প্রতিষ্ঠ ব্যক্তি কর্তৃক, সাহাজান কারারুদ্ধ হইয়াছিলেন। আওরঙ্গজেব চিরকাল ভয় করিতেন,–পাছে বা তাঁহারই দৃষ্টান্ত অবলম্বন করিয়া অন্য কেহ আধিপত্য স্থাপন করে। আওরঙ্গজেব নিষ্ঠুরপ্রকৃতি ছিলেন। তিনি মুসলমানদিগকে সন্দেহ করিতেন। র্তাহার গোড়ামিতে এবং অত্যাচার-উৎপীড়নে হিন্দুপ্রজাগণও র্তাহার প্রতি অসন্তুষ্ট হইয়াছিল ; সকলেই তাহাকে ঘৃণা করিত। সুতরাং বৃদ্ধ বয়সে আওরঙ্গজেব কেবল অশাস্তি ভোগ করিয়াছিলেন ; তাহার প্রাণে শান্তি ছিল না। কোন বীর জাতিই তাহার সহিত যোগদান করিত না ; রাজ-সভায় প্রায়ই বিশ্বস্ত ব্যক্তি দেখা যাইত না। অসাধারণ বুদ্ধিবলে আওরঙ্গজেব জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত রাজত্ব করিয়াছিলেন ; সেই বুদ্ধিবলেই তিনি এতকাল তাহার অন্তরের অসারত্ব লুকাইয়া রাখিতে পারিয়াছিলেন ; জীবিতকালে তাহার অসারত্ব কেহই বুঝিতে পারে নাই ; কিন্তু মৃত্যুর পর তাহার প্রকৃত স্বভাব ও অসারত্ব সকলেই বুঝিতে পারিয়াছিল। মোগল রাজত্বে রাজনৈতিক একতার অভাব ছিল। সিংহাসন লইয়া সর্বদাই বিবাদ-বিসংস্বাদ উপস্থিত হইত ; তাহাতেই রাজ্য-শাসন-নীতি ও আধিপত্যের স্বশৃঙ্খলা নষ্ট হইয়াছিল।৬৮ মোগল সাম্রাজ্যের অধীনে বহুসংখক ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ৬৮। মোগল রাজ্যে এ দোষ চিরদিন বর্তমান ছিল ; আকবর পরগতে 'চৌখ্রি' এবং পরগণা ‘কানুনগো" নামৰ ছুইটি পদ স্বষ্টি করিয়াছিলেন। এক্ষণে সেই দুইটি পদবী, বংশানুক্রমিক সেরিক এবং জমি-জমা ও ধনসম্পত্তির সিরেস্তাদারের স্তায় তুল্যর্থব্যঞ্জক। সেইরূপ দীর্ঘকালস্থায়ী বিৰিব্যবস্থা প্রবর্তন করা ইংরেজদের পক্ষে এখনও প্রভূত জায়াস সাপেক্ষ। বংশের মধ্যে যে ব্যক্তি স্বাক্ষ ও