পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিখদিগের স্বাধীন রাজ্য X 8X কৌশল প্রদর্শন করিয়া পেরণ আপন প্রভুত্ব পুনঃপ্রাপ্ত হইতে সক্ষম হন নাই ; কিম্বা সে সম্বন্ধে কখনও চেষ্টা করেন নাই। তিনি জানিতেন, তিনি নিজেই দোষী ; স্বতরাং তিনি সন্দিগ্ধচিত্তে মারহাট্টাদিগের নিকট হইতে পলায়ন করিয়া, নিরাপদ এবং শান্তিময় ইংরাজ রাজ্যে গমন করিলেন। দিল্লী, লাশোয়ারি, আসাই এবং আরগাম প্রভৃতি স্থানে জয় লাভ করিয়া, তৎকালে ইংরাজগণ ধীরে ধীরে রাজ্য বিস্তারের সূচনা করিতেছিলেন।** খ্ৰীষ্টীয় অষ্টাদশ শতাব্দীর প্রারম্ভে বান্দার অধিনায়কত্বে শিখজাতি বিদ্রোহতাচরণ করে। তৎকালে ইংরাজ বণিক দলের নবীন উদ্যমের সময় তাহাদের প্রতিনিধিগণ বাদসাহের দরবারে অবস্থিতি করিতে বাধ্য হইয়াছিলেন ; তাঁহাতে ইংরেজ বণিকগণের বিরক্তি জন্মে। বণিকসম্প্রদায়ের সদ্বিবেচক ব্যক্তিগণ বাণিজ্যের সুবিধা হেতু বিশেষ অধিকারের জন্য আবেদন করিতেছিলেন ; তাহারা হয়ত খালসা সৈন্তের স্ব-জাতীর "সিং" দিগের বীরোচিত মৃত্যু প্রত্যক্ষ দর্শন করিয়াছিলেন। কিন্তু গোবিন্দ যে প্রতিভা বলে শিখ জাতিকে নূতন শক্তি ও তেজে অনুপ্রাণিত করিয়াছিলেন, তাহ কেহই তখন হৃদয়ঙ্গম করিতে সমর্থ হন নাই। তাহাদের অধ্যবসায়, ধৈর্য, এবং কার্যকারিতার ফলে, যে বৃহৎ সাম্রাজ্যের ভিত্তি গঠিত হইতেছিল, তাহাও তাঁহাদের উপলব্ধি হয় নাই ॥১৮ চল্লিশ বৎসর পর, যে বিদ্রোহের ফলে পলাশী ক্ষেত্রে বিজয় লাভ হয়, তাহাতে উমীর্চাদ নামক একজন ব্যবসায়ী বিশেষ গুণপণার পরিচয় দিয়াছিলেন ; নানকের সাংসারিক-সম্প্রদায় -ভুক্ত সেই ‘শিখ বাহ সাজ-সজ্জায়ও ধর্মের ভাব বিস্তার করিতেন ; তিনি ক্লাইবের ধৃষ্টতা এবং মিথ্যাবদিতায় প্রতারিত হইয়াছিলেন। তিনি বিজয়ী ইংরেজের অবজ্ঞা ও Sal Compare Major Smith's Account of Regular Crops in Indian States, p. 31 &c. ১৮। অরম, ইতিহাস', দ্বিতীয় খণ্ড, ২২ পৃষ্ঠা ইত্যাদি ; এবং উইলসন সঙ্কলিত ‘মিল', তৃতীয় খণ্ড, ৩৪ পৃষ্ঠা *Resis, I ( See Orme, History, ii. 22 &c. and Mill, Wilson's edition, iii. 34&c.) ১৭১৫, ১৭১৬, ১৭১৭ খৃষ্টাব্দ পর্যস্ত প্রায় দুই বৎসর কাল, এই বণিক দল উদ্দেগু-সাধনোদ্দেশ্যে দিল্লীতে বাস করেন। সেই আবেদনকারিগণের মধ্যে প্রধানতঃ ডাক্তার মিঃ হামিণ্টনের অকুত্রিম স্বদেশ-হিতৈষণার ফলে, বাদসাহ কলিকাতার নিকটবতী ৩৭টি গ্রামের এক দানপত্র তাহাকে প্রদান করেন। ইংরেজদিগের সেই অনুমতি-পত্রের ফলে, পণ্যদ্রব্যের শুষ্ক রহিত হইয়াছিল। এই শেষোক্ত স্বত্বাধিকারের ফলে, ভারতবর্ষের ইতিহাসে ইংরেজদিগের অভু্যদয়ের স্বচনা হইল। বাণিজ্য-শক্তি বৃদ্ধি হওয়ায়, সহযোগী ব্যবসায়ীদিগের বিশেষ কোন স্ববিধা বা লাভ ন হইলেও, ইংরাজ প্রজাদিগের প্রভুত্বক্ষমতা অনেক পরিমাণে বৃদ্ধি হইয়াছিল। - গুরুগোবিলের গ্রন্থেও অন্ততঃ চারিটি স্থানে ইউরোপীয়দিগের বিষয় উল্লিখিত আছে। তন্মধ্যে শেষোক্তটি একজন ইংরাজের প্রতি নির্দেশিত। প্রথমতঃ, 'অকাল স্তত অংশে, ইউরোপীয়গণ ভারতবর্ষের বিভিন্ন জাতির মধ্যে একটি জাতি-বলিয়া ৰশিত রহিয়াছে ; দ্বিতীয়তঃ ও তৃতীয়তঃ, ২৪ অবতারের 'কক্ষী অধ্যায়ে, স্পষ্টভাবে ইউরোপীয়দিগের আচার-পদ্ধতির প্রশংসা দেখা যায় ; এবং চতুর্থত, পারতদেশীয় হিকায়াতে ইউরোপীয়দিগের বিষয় উল্লিখিত হইয়াছে। এন্থলে একজন ইউরোপীয় একটি রাজবালার সহিত বিবাহার্থে যুদ্ধার্থী ; কিন্তু সে ব্যক্তি উপস্তাসের বীরপুরুষের নিকট পরাজিত হয়।