পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/১৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

)8b" শিখ-ইতিহাস পঞ্জাব পরিত্যাগের পর এক বৎসরের মধ্যেই সী জামান, আপন ভ্রাতা মামুদ বর্তৃক সিংহাসনচু্যত হইলেন ; মামুদ্র তাহার দুইটি চক্ষু উৎপাটন করিয়া ফেলিলেন। কিন্তু ১৮৭৩ খ্ৰীষ্টাব্দে তৃতীয় ভ্রাত, সা স্বজ, মামুকে রাজ্যচু্যত করিয়া সিংহাসনাধিরোহণ করিলেন। এই সমূদ্রীয় অস্তর্দোহে আমেদ সার বিদেশীয় বৃহৎ সাম্রাজ্যের শীঘ্রই অধঃপতন হইল। প্রদেশ ও নগরসমূহে দুরাণি শাসনকর্তৃগণ হীনবল হইয়া পড়িলেন । রণজিৎ সিং তাহাদিগের বিরুদ্ধে স্বীয় অস্ত্রবল পরীক্ষা করিতে পশ্চাৎপদ হইলেন না ;–রণজিৎ সিংহের অবিচ্ছিন্ন আক্রমণে র্তাহারা বিধ্বস্ত হইতে লাগিলেন। ১৮০৪-৫ খ্ৰীষ্টাব্দে তিনি পশ্চিমাভিমুখে গমন করিলেন ; বঙ্গ ও সাহিওয়ালের মুসলমান শাসনকর্তৃগণ র্তাহার অধীনতা স্বীকার করিল ; রণজিৎ সিং তাহদের নিকট হইতে রাজস্ব আদায় করিতে লাগিলেন। মুলতানের মজঃফর খাঁ বহু মূল্য উপহার প্রদান করিলেন ; রণজিৎ সিং র্তাহাকে আর আক্রমণ করিলেন না । উদ্দেশু সাধনে কৃতকার্য হইয়া, রণজিৎ সিং সন্তুষ্ট হইলেন। তিনি লাহোরে প্রত্যাগমন করিয়া, রাজধানীতে ‘হোলি” উৎসব সম্পন্ন করিলেন। পরিশেষে গঙ্গাস্নানাথ হরিদ্বার অভিমুখে অগ্রসর হইয়া পঞ্জাবের পূর্বদিকে কার্য-কলাপের অবস্থা স্বচক্ষে পরিদর্শন করিতে লাগিলেন । ১৮০৫ খ্ৰীষ্টাব্দের শেষভাগে তিনি আর একবার পশ্চিমদিক আক্রমণ করিলেন ; এইবার বঙ্গ-অধিপতি দৃঢ়ৰূপে রণজিৎ -সিংহের অধীনতা-পাশে আবদ্ধ হইলেন । কিন্তু হোলকার ও আমীর খাঁ সমীপবর্তী হওয়ায়, ফতে সি প্রথমতঃ র্তাহাদিগকে আক্রমণ করিলেন ; তদপর রণজিৎ সিং স্বয়ং শিখজাতির অধিকৃত নগরাভিমুখে প্রত্যাগত হইলেন। তখন প্রতীত হইল,--আসন্ন বিপদ উপস্থিত । এক দিকে প্রবল মারহাট্টাদিগের জনৈক খ্যাতনামা সেনাপতি একজন আফগান সেনাপতিকে বিধ্বস্ত করিতে প্রয়াসী ; অন্যদিকে একদল সুশিক্ষিত ইংরাজ ওয়েডের কার্য-বৃত্তান্ত কিম্ব তাহার বর্ণনা দেখেন নাই। কিন্তু তিনি মনে করেন-মারের সঙ্কলন অপেক্ষ তাহার গ্রন্থ অধিকতর সঠিক। ব্যক্তিগত স্মৃতি এবং বাচনিক সংবাদের উপর নির্ভর করিয়া সেই গ্রন্থ বিরচিত-সমসাময়িক ইংরাজদিগের দলিল-পত্রাদির অনুকরণে লিখিত নহে। কারণ সেই সমুদায় দলিলাদিতে কেবল সাময়িক মতামতের পরিচয়ই পাওয়া যাইত। ১৮•৩ খৃষ্টাব্দের পর হইতেই সাধারণতঃ সেই দলিলাদি প্রচুর পরিমাণে রক্ষিত হইতে থাকে। বস্তুতঃ, ইংরাজ কর্মচারীদিগের অনুরোধ, স্বচতুর ভারতবাসিগণের বর্ণন সমুহ হইতে বক্ষমাণ বিবরণদ্বয় সংগৃহীত। তন্মধ্যে বুট স৷ নামক একজন মুসলমানের এবং মোহনলাল নামক একজন হিন্দুর লিখিত ইতিবৃত্ত সবিশেষ প্রসিদ্ধ। সেই গ্রন্থসমূহ সর্বত্রই পাওয়া যাইতে পারে। কাপ্তেন ওয়েড বহু বিষয়ের তথ্যানুসন্ধান করিাছেন। কিন্তু রণজিৎ সিংহের কার্যাবলীর অবিচ্ছিন্ন বিবরণ সংগ্রহের জন্য জনসাধারণ সেই কর্মচারীদ্বয়ের নিকট বিশেষ ঋণী । শিখদিগের সহিত ইংরেজের মিত্রতা সম্বন্ধে যে বিবরণ লক্ষিত হয়, বর্তমান অধ্যায়ের শেষ অংশ, এবং ষষ্ঠ ও সপ্তম অধ্যায়, সেই সমুদয় বিবরণের অনুকরণে রচিত। গ্রন্থকার গবর্ণমেণ্টের পক্ষ হইতে উহা রচনা করিয়াছিলেন। র্তাহার বিশ্বাস ছিল যে, স্বহন্ত লিখিত ও স্বরচিত বৰ্ণনাদি স্থায়তঃ ব্যবহার করা যাইতে পারে –এবং সেরাপ ব্যবহার অনুচিত নহে।