পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/৩৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

·GHa” শিখ-ইতিহাস করিয়া, গোবিন্দ তাহাদিগকে অদ্বিতীয় নৈপুণ্যের সহিত পরিচালিত করিতে লাগিলেন । এইরূপে সাহসী বীরগণ সান্থন লাভ করিলেন ; যে উন্নত শক্তি বলে তাহার একতাসূত্রে আবদ্ধ ইহতে শিক্ষা করিয়াছিল, যে শক্তিবলে শিখগণ অনুপ্রাণিত হইয়াছিল, তাহাঁদের সেই তেজঃশক্তি, ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্ব এবং সভ্যতা বলে এক্ষণে অধীনতা-পাশে আবদ্ধ হইল ; তাহারা বাধা প্রদান করিল বটে, কিন্তু কোন ফললাভ হইল না । শ্ৰেষ্ঠ শক্তির কঠোর শাসনাধীনে বিশুদ্ধভাব ধারণ করিতেই শিখদিগের সেই শক্তি ইংরাজ শক্তির পদানত হইল। ইউরোপের জ্ঞান, বিজ্ঞান ও দর্শন শাস্ত্রের আলোকমালায় তাঁহাদের মন উন্নত ও উচ্চ চিন্তায় নিমগ্ন হইবে এবং উচ্চ কার্য সম্পাদনে উপযোগী করিয়া গঠিত হইবে ॥৬০ এইরূপে শিখদিগের স্বতন্ত্র শাসনকালের অবসান হইল ;–পঞ্জাবের স্বাধীনতা স্বর্য চিরতরে অস্তাচলশায়ী হইলেন। প্রাচীন ভারত-ভূমির বিস্তৃত ভূ-খণ্ডে এক্ষণে ইংলণ্ডেরই একাধিপত্য বিদ্যমান ; ইংলণ্ড এক্ষণে ভারতের অবিসম্বাদিত অধিশ্বরী । ব্রাহ্মণ এবং ক্ষত্রিয়দিগের প্রাচীন শাসন-প্রণালী অপেক্ষ ইংলণ্ডের রাজনৈতিক প্রাধান্ত অধিকতর নিয়মাহূবত । প্রাচীন মুসলমান-সাম্রাজ্য বহিঃশত্রুর আক্রমণে বিধ্বস্ত হইয়াছিল। কিন্তু বৃটিশ রাজ্য বহিঃশত্রুর আক্রমণ ভয় হইতে সম্পূর্ণ নিরাপদ ; বৈদেশিক শত্রুর আক্রমণে সে রাজ্য বিধ্বস্ত হওয়া নিতান্ত দুরূহ। ইংলণ্ডের সৈন্যদল স্বশিক্ষিত, এবং অর্থ-সামর্থও অত্যন্ত অধিক ; সর্বকার্যেই ইংলণ্ডের জনসাধারণের একতা বর্তমান ; এবং অতি বিচক্ষণতার সহিত সকল মন্ত্রণাই স্থির হইয়া থাকে ; সে শাসন প্রণালী প্রাচ্য দেশের বিচক্ষণ ব্যক্তিগণেরও বোধগম্য নহে। ইংলণ্ডের প্রতিষ্ঠিত শাসনপ্রণালী, প্রাচীন রোমের আদর্শ শাসননীতির সমতুল। কিন্তু এক্ষণে হিন্দুগণ সমগ্র দেশে আপনাদিগের প্রভাব বিস্তার করিয়াছে ; সমুদ্রোপকূল হইতে সমুদ্রোপকূল পর্যন্ত তুষারাচ্ছন্ন হিমালয় শৃঙ্গ হইতে বীরপ্রবর রামচন্দ্র নির্মিত পৌরাণিক সেতু পর্যস্ত বিস্তৃত বিশাল রাজ্যের অধিবাসী স্ত্রীরাম কৃষককুল দ্বি-জাতি বংশের ভাষা গ্রহণ করিয়াছে ; এখনও তাহার সেই ভাষাই ব্যবহার করিয়া থাকে। ক্ষত্রিয় জাতির প্রাধান্ত প্রবল হওয়ায়, মধ্যখণ্ড ও দক্ষিণ ভারতের অসভ্য পর্বতবাসী এবং বন্য প্রদেশের অধিবাসীগণের ভাষা ক্ষত্রিয়দিগের ভাষার সহিত মিলিত হইয়া গিয়াছে ; এক্ষণে তাহার একটি মিশ্রত ভাষায় কথাবাওঁ কহিয়া থাকে। সহস্ৰ সহস্ৰ লোকের প্রাত্যহিক আচার ৬• । শিখ-যুদ্ধের অব্যবহিত পরে, ১৮৪৬ খৃষ্টাব্দের মার্চ মাসে গ্রন্থকার শিখদিগের ধর্মমন্দির ও সমূহ পরিদর্শন করিতে কীর্তিপুর এবং আনন্দপুর মাখোমালে গমন করেন। শেষোক্ত স্থানটি ধন্দের অধিকতর প্রিয় ছিল । তত্ৰত্য সকলেই ভবিষ্যতে বিশ্বাস করিয়া থাকেন। বিচক্ষণ ও বহুদশী ধর্মযাজক এবং ধর্মবিধাতৃগণ বলিতেন, সর্ব সময়ে সকল দেশের অধিবাসীই ‘খালসা" ধর্ম গ্রহণ করিতে পারে। দুৰ্বিসহ প্রজাপীড়ক মুসলমান সাম্রাজ্যের উচ্ছেদ-সাধনে বৈদেশিক ইংরেজগণ ষে সাহায্য প্রদান কৰিয়াছেন,নানকের শিষ্যসম্প্রদায় সে সাহায্য প্রাপ্তির জন্য ইংরাজদিয়ে নিকট চিরকৃতজ্ঞ,ধর্মযাজকগণ তাহাও স্বীকার করিতেন । r