পাতা:শিখ-ইতিহাস.djvu/৪০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

1908 শিখ-ইতিহাস করিল। তখন মূলরাজ ও ব্রিটিশ-পক্ষের মধ্যে যে কি বিষম ভাব-প্রবাহ প্রবাহিত হইল, তাহা সহজেই অনুমান করা যাইতে পারে। o মূলরাজের পূর্ব অভিসন্ধি যাহাই থাকুক, এক্ষণে তিনি প্রকাগু বিদ্রোহী বলিয়া পরিগণিত হইলেন। ইতিমধ্যে ১১এ এপ্রিল সন্ধ্যার সময় ব্রিটিশ সৈন্তের ভারবহনকারী পশুপাল লুষ্ঠিত হইল। তখন আর র্তাহীদের পলায়নের পথ রহিল না । অগত্যা ইদগা' অট্টালিকায় ব্রিটিশ সৈন্যগণ যথাসম্ভব আত্মরক্ষার ব্যবস্থা করিলেন । তখন তাঁহাদের সমস্ত সৈন্য এবং ভূতগণ প্রাচীরের গণ্ডীর মধ্যে প্রবেশ করিল ; এবং লাহোর হইতে যে ছয়টি কামান আনা হইয়াছিল, প্রাচীরপাশ্বে সেই কামান-শ্রেণী সজ্জিত হইল । সেই অবস্থায় অতি নৈরাপ্তের মধ্যে ব্রিটিশ-পক্ষ কালাতিপাত করিতে লাগিলেন। তাঁহাদের মনে হইল, আর তিন চারি দিন কাল যদি তাহারা এইভাবে আত্মরক্ষা করিতে পারেন তাহা হইঙ্গে, তাহাদের সাহায্যাৰ্থ সৈন্যদল আসিয়া পড়িবে ; তাঁহা হইলে, আর কোনই আশঙ্কার কারণ থাকিবে না। কিন্তু পরদিন প্রাতঃকালে তাহাঁদের সকল ভরসাই লোপ পাইল। দুর্গের কামান-সকল ইদগার দিকে অগ্নিবর্ষণ করিতে লাগিল ; কিন্তু ইদগার ছয়টি কামানের একটির অধিক তোপ দাগিবার স্ববিধ হইল না। অধিকন্তু, ইংরেজের সহরে লাহোরের গোলন্দাজগণ তোপ দাগিতে অস্বীকৃত হইল ; তাহারা দলে দলে পদত্যাগ করিতে লাগিল। শেষ এমন হইল, খ সিংহ এবং আট দশটি সৈন্য ও ব্রিটিশ কর্মচারিদ্বয়ের কয়েকটি ভূত্য ব্যতীত আর কেহই তাহাদের সাহায্য করিবার রহিল না। তখন, বিপক্ষগণকে বাধা দেওয়ার সকল আশা-ভরসা লোপ পাইল দেখিয়া, ব্রিটিশকর্মচারীরা মূলরাজের নিকট এক পত্র পাঠাইলেন ; মূলরাজ তাহাদিগের প্রতি আত্মসমৰ্পণকারী বন্দীর ন্যায় ব্যবহার করেন,—পত্রে ইহাই জানান হইল। মূলরাজ তাহাতে বলিয়া পাঠাইলেন,—ব্রিটিশ-কর্মচারিগণ দেশ পরিত্যাগ করিয়া পলায়ন করুন ; তাহাদের প্রতি কেহই কোনরূপ অত্যাচার করিবে না। অর্থাৎ, প্রকারাস্তরে তিনি জানাইলেন, সৈন্যগণ তখন এতদূর উন্মত্ত ও উচ্চুম্বল যে, তাহাদিগকে থামাইয়া রাখিবার ক্ষমতা তাহার নাই ; সে অবস্থায়, ব্রিটিশ-কর্মচারিগণের পক্ষে মুলতান পরিত্যাগ করিয়া পলায়ন করাই শ্ৰেয় । মূলরাজ যাহা আশঙ্কা করিলেন, কার্যতও তাঁহাই সংঘটিত হইল। উন্মত্ত জনসাধারণ এবং সৈনিক পুরুষগণ বিকট হুঙ্কার করিয়া ইদগা আক্রমণ করিল। সেই আক্রমণে খ সিংহ বন্দী এবং দুই জন ইংরেজ-কর্মচারী নৃশংসভাবে নিহত হইলেন। কোনও কোনও ইংরেজ ঐতিহাসিক বলেন,—ইদগা আক্রমণ-ব্যাপারে মূলরাজের যোগাযোগ ছিল, এবং এই ব্যাপারের নেতৃগণকে তিনি পুরস্কৃত করিয়াছিলেন। এলভিযোগ সম্পর্কে মূলরাজের যদি কোনও বক্তব্য থাকে, এখন আর তাহ বলিবেই বা কে, এখন আর তাহ শুনিবেই বা কে ? তবে এই হত্যকাণ্ডের জন্য, ব্রিটিশ“গবরমেন্টই যে প্রকাস্তরে দায়ী, তাহ নিঃসঙ্কোচে বলা যাইতে পারে। প্রথম শিখযুদ্ধের অবসানের পর, সন্ধিসর্তাচুলারে শিখ-রাজ্যে শান্তি-সংরক্ষত্রের ভার তাহারাই তে আপন হন্তে গ্রহণ করিয়াছেন । সে ক্ষেত্রে, পুনরায় শাস্তিভঙ্গ হইলে, তাহারাই