কয়েকজন স্থানীয় লোক তাঁহাকে গুপ্ত পথ দেখাইয়া দিল। দুর্গপ্রাচীরে পৌঁছিয়াই সেখানকার বাদশাহী প্রহরীদের নিহত করিয়া তাঁহারা ভিতরে ঢুকিলেন। কিলাদার উদয়ভান এবং তাঁহার রাজপুত সেনারা দুর্গ রক্ষা করিতেছিল। ‘শত্রু আসিয়াছে’ এই চীৎকার শুনিয়া তাহারা সেদিকে অগ্রসর হইল। কিন্তু শীতের রাত্রে আফিংখোর রাজপুতরা তাড়াতাড়ি শয্যাত্যাগ করিতে পারিল না। ইতিমধ্যে মারাঠারা দুর্গ-প্রাচীরের এক অংশ বেশ দখল করিয়া বসিয়াছে। যখন রাজপুতগণ আসিয়া পৌঁছিল, মারাঠারা “হর হর মহাদেব” শব্দে তাহাদিগকে আক্রমণ করিল। উদয়ভান তানাজীকে দ্বন্দযুদ্ধে আহ্বান করিলেন। পরস্পরের তরবারির আঘাতে দুই সেনানীই মারা গেলেন। কিন্তু তানাজীর ভাই সূর্য্যাজী সামনে আসিয়া বলিলেন, “সৈন্যগণ। ভাই মারা পড়িয়াছেন, কিন্তু ভয় নাই। আমি তোমাদের নেতা হইব।” নেতার পতনে রাজপুতেরা কিছুক্ষণ হতভম্ব হইয়া রহিল। আর অমনি মারাঠারা আবার রুখিয়া তাহাদের আক্রমণ করিল। ইতিমধ্যে তাহারা দুর্গের দরজা খুলিয়া দেওয়ায় আরও অনেক মারাঠ সৈন্য নীচ হইতে ভাল পথ দিয়া দুর্গে ঢুকিল। অবশেষে এই নিস্ফল যুদ্ধে বারো শত রাজপুত মারা পড়িল, অনেকে পাহাড়ের গা বাহিয়া পলাইতে গিয়া নীচে পড়িয়া প্রাণ হারাইল।
বিজয়ী মারাঠারা দুর্গের ভিতরের আস্তাবলের খড়ের ছাদে আগুন ধরাইয়া দিল। পাঁচ ক্রোশ দূরে রাজগড় হইতে সেই আলো দেখিয়া শিবাজী বুঝিলেন যে তাঁহার জয় হইয়াছে। পরদিন যখন সকল সংবাদ পাইলেন, তখন দুঃখ করিয়া বলিলেন, “গড়টা পাইলাম বটে, কিন্তু সিংহকে হারাইলাম। তিনি কোণ্ডানার নাম বদলাইয়া “সিংহগড়” করিলেন, এবং তানাজীর পরিবারকে অনেক পুরস্কার দিলেন।
এইরূপে কোণ্ডানা, পুরন্দর, কল্যাণ-ভিবণ্ডী, মাহুলী প্রভৃতি অনেক