পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১১৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজীর দ্বিতীয়বার সুরত-লণ্ঠন
১০৯

 এই বৎসর (১৬৭০) ৩রা অক্টোবর শিবাজী আবার সুরত-বন্দর লুঠ করিলেন। একমাস আগে হইতে সকলেই শুনিতেছিল যে, তিনি কল্যাণ শহরে অনেক অশ্বারোহী সৈন্য একত্র করিতেছেন এবং প্রথমেই সুরত আক্রমণ করিবেন। এমন কি ইংরাজেরা এই লুঠ সম্বন্ধে এত নিশ্চিত ছিল যে, আগেই তাহাদের সুরত-কুঠী হইতে সব টাকাকড়ি মালপত্র এবং কার্য্যনির্ব্বাহক সভার লোকজন পর্য্যন্ত সুহায়িলীতে সরাইয়া ফেলিয়াছিল। অথচ সুরতের মুঘল-শাসনকর্ত্তা এমন অলস ও অন্ধ যে অত-বড় ধনশালী শহর রক্ষার জন্য সে শুধু তিনশত সৈন্য রাখিয়াছিল।

 ৩রা অক্টোবর প্রাতে শিবাজী পনের হাজার সৈন্যসহ সুরতে প্রবেশ করিলেন। তাহার পূর্ব্বদিন ও রাত্রে সমস্ত ভারতীয় বণিক—এমন কি সরকারী কর্ম্মচারীরাও শহর ছাড়িয়া দূরে পলাইয়া গিয়াছিল। ১৬৬৪ সালে প্রথম লুঠের পর বাদশাহর আজ্ঞায় সুরতের চারিদিক একটা ইটপাথরের দেওয়াল দিয়া ঘেরা হইয়াছিল, বটে, কিন্তু তাহা এত সামান্য যে শিবাজীর পনের হাজার লোকের সম্মুখে তিনশত মুঘলচৌকীদার দাঁড়াইতে পারিল না, তাহারা দুর্গের মধ্যে পলাইয়া গেল।

 দুইদিন একবেলা ধরিয়া মারাঠারা এই পরিত্যক্ত শহর লুঠ করিল। ডচ্-কুঠীতে খবর পাঠাইল—“যদি তোমরা চুপচাপ করিয়া থাক তবে তোমাদের কোন অনিষ্ট হইবে না।” তাহারা তাহাই করিল। ফরাসী কুঠীর সাহেবরা মূল্যবান উপহার দিয়া মারাঠাদের খুশী করিল। সুহায়িলী হইতে আনা পঞ্চাশজন জাহাজী-গোরা (বিখ্যাত স্ট্রেনস্-হ্যাম মাষ্টারের অধীনে) ইংরাজ-কুঠী রক্ষা করিল; যে মারাঠাদল উহা লুঠ করিতে আসিয়াছিল ইংরাজদের অব্যর্থ বন্দুকের গুলিতে তাহাদের এত লোক