পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১১৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১০
শি বা জী

মারা গেল যে আর কেহ সেদিকে অগ্রসর হইল না। পারসী ও তুর্কী বণিকদের দুর্গের মত “নূতন সরাই”ও রক্ষা পাইল।

 ফরাসী-কুঠীর সামনে “তাতার সরাই”য়ে কাশঘরের পদচ্যুত রাজা আবদুল্লা খাঁ মক্কা হইতে কয়েকদিন আগে ফিরিয়া বিশ্রাম করিতেছিলেন। নিকটের কয়েকটি গাছের আড়াল হইতে মারাঠারা প্রথম দিন এই সরাইএর উপর গুলি চালাইতে লাগিল। তাহাতে অতিষ্ঠ হইয়া রাত্রে সকলে ভিতর হইতে পলাইয়া গেল। মারাঠারাজার ধনসম্পত্তি, আওরংজীবের দেওয়া সোনার খাট এবং অন্যান্য মূল্যবান উপহার সব দখল করিল।

 মারাঠারা অবসর-মত অবাধে বড় বড় বাড়ী লুঠ করিয়া সুরত হইতে ৬৬ লক্ষ টাকার ধনরত্ন লইয়া ৫ই অক্টোবর দুপুর বেলা তাড়াতাড়ি শহর ত্যাগ করিল। লুঠের পর তাহারা এত জায়গায় আগুন লাগাইয়া দিয়াছিল যে প্রায় অর্দ্ধেক শহর পুড়িয়া ছাই হইয়াছিল। প্রথম দিনের আক্রমণে ইংরাজদের গুলিতে অনেক মারাঠা মারা পড়ায় শিবাজীর সৈন্যগণ প্রতিহিংসা লইবার জন্য তৃতীয় দিন ইংরাজ-কুঠীর সামনে আসিয়া “কুঠী পুড়াইব” বলিয়া চেঁচাইতে লাগিল। কিন্তু তাহাদের নেতারা জানিত যে আবার আক্রমণ করিলে আরও লোক মারা যাইবে। শেষে একটা নিষ্পত্তি হইল। দুইজন ইংরাজবণিক শহরের বাহিরে শিবাজীর শিবিরে গিয়া কিছু লাল বনাত, তরবারি এবং ছুরি উপহার দিল। রাজা তাহাদের প্রতি বেশ মিষ্ট ব্যবহার করিলেন এবং তাহাদের হাত ধরিয়া বলিলেন, “ইংরাজেরা আমার বন্ধু; আমি তাহাদের কোন অনিষ্ট করিব না।”

সুরতের দুর্দ্দশা

 সুরত ছাড়িবার সময় শিবাজী শহরের শাসনকর্ত্তা এবং প্রধান বণিকদের নামে এই মর্ম্মে এক চিঠি পাঠাইলেন যে, যদি তাহারা