পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪২
শিবাজী

টাকা আত্মসাৎ করিয়াছিলেন; ঈর্ষাবশে অন্যান্য মন্ত্রীরা সে কথা প্রকাশ করিয়া দিল। এতদিন একাধিপত্য করিবার পর, হিসাব দিতে বা হুকুমে চলিতে রঘুনাথ অপমান বোধ করিলেন। তিনি উজীরীতে ইস্তফা দিয়া কাশী যাত্রা করিবার ভাণে তাঞ্জোর হইতে সপরিবারে চলিয়া আসিলেন। এই সংবাদ পাইয়া শিবাজী তাহাকে অতি সমাদরে আহ্বান করিলেন এবং নিজ রাজ্যে চাকরি দিলেন। রঘুনাথ তাহাকে কর্ণাটকের জায়গা জমি ও কর্মচারীদের নাড়ীনক্ষত্র সব বলিয়া দিলেন, এবং নিজ বংশের এতদিনকার প্রতিষ্ঠা-প্রতিপত্তি দিয়া শিবাজীর কর্ণাটক-আক্রমণে বিশেষ সাহায্য করিতে লাগিলেন।

 পেশোয়াকে নিজ প্রতিনিধি করিয়া বসাইয়া, কোঁকন-প্রদেশের শাসনভার অন্নাজী দত্ত (সুরণীস)-কে দিয়া, এবং উভয়ের অধীনে এক একটি বড় সৈন্যদল রাখিয়া,—১৬৭৭ সালের জানুয়ারি প্রথমে শিবাজী রায়গড় হইতে রওনা হইলেন।

 ইতিমধ্যে তাঁহার দুত প্রহলাদ নিরাজী গোলকুণ্ডা-রাজ কুতুব শাহকে শিবাজীর সহিত সাক্ষাৎ করিতে রাজি করাইয়াছিলেন। প্রথমে সুলতানের ভয় হইয়াছিল পাছে আফজল বা শায়েস্তা খাঁর মত তাহার দশা ঘটে। কিন্তু প্রহলাদ নানাপ্রকার ধর্মশপথ করিয়া তাহাকে বুঝাইলেন যে শিবাজী কখনও বিশ্বাসঘাতকতা করিবেন না। আর মাদন্নাও সেই মত সমর্থন কবিলেন এবং রাজাকে দেখাইয়া দিলেন যে শিবাজীকে কাছে আনিয়া বন্ধুত্ব পাকা করিতে পারিলে ভবিষ্যতে মুঘলআক্রমণ হইতে গোলকুণ্ডা রক্ষা করার নিশ্চিন্ত উপায় হইবে।

শিবাজীর গোলকোণ্ডা-বাজ্যে প্রবেশ

 নিজ চোখে চোখে সৈন্যদের শৃঙ্খলার সহিত চালাইয়া, প্রত্যহ নিয়মিত কুচ করিয়া শিবাজী এক মাসে হায়দাবাদ শহরে আসিয়া