পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দক্ষিণ-বিজয়
১৪৫

দাঁড়াইয়া রহিল; শুধু শিবাজী পাঁচজন প্রধান কর্মচারীর সহিত সিড়ি বাহিয়া দরবার-গৃহে উঠিলেন। সেখানে কুতুব শাহ প্রতীক্ষা করিতেছিলেন; তিনি দরজা পর্যন্ত উঠিয়া আসিয়া শিবাজীকে আলিঙ্গন করিলেন এবং হাত ধরিয়া লইয়া গিয়া গদীর উপর নিজ পাশে বসাইলেন;, মন্ত্রী মাদন্নাকে ফরাশে বসিতে অনুমতি দেওয়া হইল; আর সকলে দাঁড়াইয়া রহিল। অন্তঃপুরের বেগমেরা দুই পাশের পাথরের জাফরি-কাটা জানালার ফাক দিয়া কুতুহলে এই অপূর্ব দৃশ্য দেখিতে লাগিলেন।

 কুতুব শাহ তিন ঘণ্টা ধরিয়া কথাবার্তা কহিলেন, এবং শিবাজীর মুখে তাহার জীবনের আশ্চর্য ঘটনা ও বীর কীর্তিগুলির বিস্তারিত বিবরণ মুগ্ধ হইয়া শুনিলেন। পরে তিনি স্বহস্তে শিবাজীকে পান আতর দিয়া, এবং মারাঠা মন্ত্রী ও সেনাপতিদের খেলাৎ অলঙ্কার হাতীঘোড় উপহার দিয়া বিদায় করিলেন। স্বয়ং শিবাজীর সঙ্গে সঙ্গে সিঁড়ির নীচ তলা পর্যন্ত গেলেন। সেখান হইতে পথে টাকা ছড়াইতে ছড়াইতে শিবাজী বাসাবাড়ীতে পৌঁছিলেন।

 উজীর মাদন্না পণ্ডিত পরদিন শিবাজী ও তাঁহার প্রধান কর্মচারীদিগকে নিমন্ত্রণ করিয়া খাওয়াইলেন; তাহার মাতা স্বহস্তে অতিথিদের জন্য রান্না করিলেন। ভোজশেষে নানা উপহার পাইয়া মারাঠারা বাসায় ফিরিল।

গোলকুণ্ডা-রাজের সহিত সন্ধি

 তাহার পর কাজের কথা আরম্ভ হইল। অনেক আলোচনার পর শিবাজীর সহিত এই শর্তে সন্ধি হইল -কুতুব শাহ দৈনিক পনের হাজার টাকা এবং নিজ সেনাপতি মীজা মহম্মদ আমিনের অধীনে পাঁচ হাজার সৈন্য, কতকগুলি তোপ এবং গোলা বারুদ দিয়া

১০