পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৮
শিবাজী

দেখিয়া তিনি আনন্দে অভিভূত হইয়া পড়িলেন। এটা যেন তাঁহার নিকট দ্বিতীয় কৈলাস বা শিবের স্বর্গ বলিয়া বোধ হইল। মরিবার এমন উপযুক্ত স্থান এবং সময় আর মিলিবে না ভাবিয়া শিবাজী স্থির করিলেন, তিনি দেবী-প্রতিমার চরণে নিজমাথা কাটিয়া দিয়া দেহ ত্যাগ করিবেন। প্রবাদ আছে, ভগবতী স্বয়ং আবির্ভূত হইয়া, শিবাজীর উদ্যত তরবারি ধরিয়া ফেলিয়া তাহাকে থামালেন এবং বলিলেন, “বৎস! এই উপায়ে তোমার মোক্ষ হইবে না। একাজ করিও না। তোমার হাতে এখনও অনেক বড় বড় কর্তব্যভার রহিয়াছে।” তাহার পর দেবী অদৃশ্য হইলেন, শিবাজীও ক্ষান্ত হইলেন।

জিঞ্জি অধিকার

 এপ্রিল মাসের ৪ঠা ৫ই অনন্তপুরে ফিরিয়া শিবাজী সসৈন্য দ্রুত মাদ্রাজ প্রদেশের দিকে চলিলেন। ভারত-বিখ্যাত তিরুপতি পৰ্বতের মন্দির দেখিয়া পূর্ব্ব-কুলের সমভূমিতে নামিলেন, এবং মে মাসের প্রথম সপ্তাহে মাদ্রাজ শহরের সাত মাইল পশ্চিমে পেচ্ছাপোল নগরে পৌঁছিলেন। এখান হইতে তাহার অগ্রগামী সৈন্য-পাঁচ হাজার অশ্বারোহী, দ্রুত জিঞ্জি-দুর্গে উপস্থিত হইল। তাহার মালিক নসির মহম্মদ খাঁ বার্ষিক পঞ্চাশ হাজার টাকা আয়ের জাগীর এবং কিছু নগদ টাকা পাইবার প্রতিশ্রুতি লাভ করিয়া তৎক্ষণাৎ এই অজেয় দুর্গ মারাঠাদের হাতে ছাড়িয়া দিল (১৩ই মে)। শিবাজী শীঘ্রই সেখানে আসিয়া পৌঁছিলেন এবং জিঞ্জি নিজ দখলে রাখিয়া উহার দেওয়াল পরিখা বুরুজ প্রভৃতি এত দৃঢ় করিলেন যে “ইউরোপীয়গণও তাহা করিলে গর্ব্ব অনুভব করিত।”

 সেখান হইতে রওনা হইয়া শিবাজী ২৩ মে বেলুর-দুর্গ অবরোধ করিলেন। ইহাও জিঞ্জির মত দুর্জ্জয় গড়। ইহার শাসনকর্তা হাবশী