পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দক্ষিণ-বিজয়
১৪৯

আবদুল্লা খা ঁআদিল শাহর বিশ্বাসী কর্মচারী; সে মারাঠাদের সব গোলাবাজী ও আক্রমণ তুচ্ছ করিয়া মহাবিক্রমের সহিত চৌদ্দ মাস লভিল, শেষে যখন দেখিল যে প্রভুর নিকট হইতে কোন সাহায্য আসিবে না, আর তাহার দুর্গরক্ষী সৈন্যদের মধ্যে পদাতিকের সংখ্যা ১,৮০০ হইতে দুইশত এবং অশ্বারোহীর সংখ্যা ৫০০ হইতে এক শততে দাড়াইয়াছে—তখন আবদুল্লা শিবাজীকে দুর্গ ছাড়িয়া দিল (২১ আগষ্ট ১৬৭৮)। এজন্য তাহাকে দেড় লক্ষ টাকা নগদ এবং বার্ষিক সেই পরিমাণ আয়ের জাগার দিবার শর্ত্ত হইল।

মারাঠাদের কর্ণাটক লুণ্ঠন

 শিবাজীর সৈন্যদল দ্রুতবেগে কুচ করিয়া বন্যার মত মাদ্রাজ প্রদেশের সমভূমি ছাইয়া ফেলিল। চারিদিকে যাহা পাইল গ্রাস করিল; কেহই তাহাদের সম্মুখে দাঁড়াইতে সাহসী হইল না। শুধু গোটা-কয়েক দুর্গ জলবেষ্টিত দ্বীপের মত কিছুদিনের জন্য স্বাধীনভাবে খাডা রহিল। প্রথমে এক হাজার মারাঠা-অশ্বারোহী দুই দিনের পথ আগে আগে চলিল; তাহার পিছনে অবশিষ্ট সৈন্য লইয়া শিবাজী স্বয়ং আসিলেন; আর সর্বপশ্চাতে চাকর-বাকর এবং সিংহের পিছু পিছু শৃগালের পালের মত লুঠের লোভে আগত স্থানীয় ছোট জমিদার, ডাকাতের সর্দার, এবং জঙ্গলী জাতের দলপতি ("পলিগর”) ঘুরিতে লাগিল। টাকা আদায়ের জন্য শিবাজীর কঠোর পীড়ন এবং তাহার সৈন্যদের বিক্রম ও নিষ্ঠুরতার সংবাদ আগে আগে চলিল। পথ হইতে বড়লোকেরা যে যেখানে পারিল পলাইল, কেহ বনে কেহ-বা সাহেবদের সুরক্ষিত বন্দরে স্ত্রীপুত্র ও ধনরত্ন সহ আশ্রয় লইল।  এদিকে শিবাজীর টাকার বড় দরকার। তিনি প্রতিজ্ঞা ভঙ্গ করিয়া, কুতুবশাহী সরকারকে জিঞ্জি না দিয়া নিজ দখলে রাখায়, গোলকুণ্ডা-