পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৫৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫০
শিবাজী

রাজ্যের নিকট হইতে দৈনিক পনের হাজার টাকার সাহায্য বন্ধ হইয়া গেল। তখন শিবাজী ঐ অঞ্চলের সব বড় বড় শহরে চিঠি পাঠাইয়া দশ লক্ষ টাকা ঋণ চাহিলেন; অবশ্য এই ঋণ-পরিশোধের আশা ছিল না, আর তাহা চাহিবার মত দুঃসাহস কাহারই বা? শিবাজী তখন ঐ দেশের ধনী লোকদের নামধাম ও তাহাদের ধনদৌলতের একটা তালিকা করিলেন। তাঁহার চৌথ-আদায়ের তহসিলদারগণ দেশ ছাইয়া ফেলিল। বিশ হাজার ব্রাহ্মণ এই সব চাকরির আশায় তাহার সঙ্গে আসিয়াছিল। তাহারা অতি নির্লজ্জভাবে লোকদের শেষ কড়িটি পর্যন্ত কাড়িয়া লইল-ন্যায়বিচার দয়া-মায়ার ধার ধারিল না। (ফ্রাঁসোয়া মাতঁর ডায়েরি)। ইংরাজ ফরাশী ও ডচ কুঠীর বণিকেরা বার-বার দূত এবং উপহার পাঠাইয়া শিবাজীকে তুষ্ট রাখিলেন।

শের খাঁ লোদীর পবাজয়

 জিঞ্জি প্রদেশের দক্ষিণে শের খাঁ লোদীর প্রকাণ্ড জাগীর, কাবেরী নদী পর্যন্ত বিস্তৃত। তিনি যুদ্ধে একেবারেই অপারক; চতুর দ্রাবিড় ব্রাহ্মণ মন্ত্রীদের পরামর্শে সব কাজ চালাইতেন। ইহারা তাঁহাকে বুঝাইয়া দিল যে শিবাজীর সৈন্যবল কিছুই না, কিন্তু তাহার বন্ধু ও সহায়ক পণ্ডিচেরীর শাসনকর্তা ফ্রাঁসোয়া মার্তা সাহেব তাঁহাকে বলিয়াছিলেন যে এ শত্রু বড় ভীষণ। শের খাঁ নিজ সৈন্য (চার হাজার অশ্বারোহী ও তিন-চার হাজার পেয়াদা ধরণের ভীরু অকেজো পদাতিক) লইয়া ১০ই জুন হইতে তিরুবাড়ীতে (কাডালোরের ১৩ মাইল পশ্চিমে) মারাঠাদের পথ রোধ করিয়া বসিয়া থাকিলেন। ২৩ মে শিবাজী জিঞ্জি হইতে বেলুরে পৌঁঁছিয়া, তথায় এক মাস থাকিয়া ঐ দুর্গ অবরোধের বন্দোবস্ত করিয়া দিয়া হয় হাজার অশ্বারোহী সহ ২৬ জুন তিরুবাড়ীতে আসিলেন। তাঁহাকে দেখিবামাত্র শের খাঁ নিজ সৈন্যদল সাজাইয়া