পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৫২
শি বা জী

শিবাজী ও ব্যঙ্কাজীর সাক্ষাৎ ও কলঙ্ক

 শিবাজী এখান হইতে আরও দক্ষিণে কুচ করিয়া কোলে নদী (অর্থাৎ কাবেরীর মুখের কাছে সর্ব্ব-উত্তর শাখা)র তীরে তিরুমল-বাড়ী নামক স্থানে ১২ই জুলাই পৌঁছিয়া বর্ষা কাটাইবার জন্য সৈন্যদেরশিবির গাডিলেন। ব্যঙ্কাজীর রাজধানী তাঞ্জোর শহর এখান হইতে দশ মাইল মাত্র দক্ষিণে, মধ্যে শুধু কোলেরুণ নদী। এখানে বসিয়া মাদুরার রাজার নিকট হইতে কর আদায়ের চেষ্টা হইতে লাগিল, এক কোটি টাকা চাওয়া হইল, কিন্তু শেষে ত্রিশ লক্ষে রফা হইল। স্থির হইল, এই টাকা পাইলে শিবাজী আর মাদুরা আক্রমণ করিবেন না।

 ইতিমধ্যে শিবাজী তাঁহার বৈমাত্রেয় ভ্রাতা ব্যঙ্কাজীকে দেখা করিবার জন্য ডাকিয়া পাঠাইলেন। তাঁহার অনুরোধে প্রথমে ব্যঙ্কাজীর মন্ত্রীরা শিবাজীর সহিত আলোচনা করিতে আসিল, এবং শিবাজীর তিনজন মন্ত্রী ও নিমন্ত্রণপত্র লইয়া তাহারা নিজ প্রভুর কাছে ফিরিয়া গেল। শিবাজীর অভয়বাণীতে আশ্বস্ত হইয়া ব্যঙ্কাজী দু হাজার অশ্বারোহীর সহিত জুলাই মাসের মাঝামাঝি তিরুমল-বাড়ীতে পৌছিলেন। শিবাজী তাহাকে অভ্যর্থনা করিলেন এবং কয়েক দিন ধরিয়া ভোজ ও উপহার বিনিময় চলিল। তাহার পর কাজের কথা উঠিল। শাহজী মৃত্যুকালে যে সব ধনসম্পত্তি এবং কর্ণাটকে জাগীর রাখিয়া যান তাহার সমস্তই ব্যঙ্কাজীর হাতে পড়িয়াছিল; পিতার জ্যেষ্ঠপুত্র হিসাবে, শিবাজী এখন তাঁহার বারো আনা দাবি করিলেন। ব্যঙ্কাজী সিকিমাত্র লইয়া সন্তুষ্ট থাকিতে অস্বীকার করিলেন; তখন শিবাজী রাগিয়া তাহাকে খুব ধমকাইলেন এবং নজরবন্দী করিয়া রাখিলেন। ব্যঙ্কাজী দেখিলেন, ধনসম্পত্তি সব সঁপিয়া না দিলে মুক্তি পাওয়া দুরূহ। কিন্তু তিনি শিবাজীরই ভাই বটে;