পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
দক্ষিণ-বিজয়
১৫৩

গোপনে জোগাড়যন্ত্র ঠিক কবিয়া এক রাত্রে শৌচের ভাণ করিয়া নদীতীরে এক নির্জন স্থানে গেলেন। সেখানে তাহার পাঁচজন অনুচর একটি ভেলা লইয়া প্রস্তুত ছিল। ব্যঙ্কাজী তাহাতে লাফাইয়া উঠিয়া নদী পার হইয়া নিজ রাজ্যে পৌঁছিলেন (২৩ জুলাই)।

 পরদিন রাতে এই সংবাদ পাইয়া শিবাজী মহা চটিয়া বলিলেন, “ও পলাইল কেন? আমি কি উহাকে ধরিতে যাইতেছিলাম? *** পলাইবার কথা নয়। আমি যাহা চাহিয়াছিলাম, দিবার ইচ্ছা না থাকিলে বলিলেই পারিত। অতি কনিষ্ঠ ত কনিষ্ঠ, বুদ্ধিও ছেলেমানুষের মত দেখাইল।” ব্যঙ্কাজীর মন্ত্রিগণ প্রভুর খবর পাইয়া পলাইবার উদ্যোগ করিল, তাহাদের ধরিয়া শিবাজীর কাছে আনা হইল। কয়েকদিন আটক থাকিবার পর তিনি তাদের খালাস করিয়া খেলাৎ ও উপহার দিয়া তাঞ্জোরে পাঠাইয়া দিলেন; নচেৎ এই নিষ্ফল নির্যাতনে তাহার দুর্নাম ভিন্ন কোনই লাভ হইত না। শিবাজী কোলেরুণের উত্তরে শাহজরি সমস্ত জাগীর নিজে দখল করিলেন।

শিবাজী শিবিবেব বর্ণনা

 ফরাসী-দূত জারমায়্যাঁ সাহেব তিরুমল-বাড়ীতে শিবাজীর শিবির দেখিয়া এই বর্ণনা লিখিয়া গিয়াছেন:—

 “তাহার শিবিরে কোন রকম ধূমধাম নাই, ভারী মালপত্র বা স্ত্রীলোকের ঝঞ্জাট নাই। সমস্ত শিবিরে দুটি মাত্র তাম্বু, তাহাও আকারে ছোট এবং মোটা সাধারণ কাপড়ে তৈয়ারি; একটায় থাকেন শিবাজী, অপরটায় তাঁহার পেশোয়া। মারাঠা-অশ্বারোহীদের মাসিক বেতন দশ টাকা করিয়া, এবং তাহাদের ঘোড়া ও সইস রাজাই দেন। প্রতি দুইজন সৈন্যের জন্য তিনটি করিয়া ঘোড়া রাখা হয়, এইজন্য তাহারা খুব দ্রুত চলিতে পারে। শিবাজী গুপ্তচরদের মুক্তহস্তে টাকা দেন,