পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজীর অভ্যুদয়
১৩

জ্যেষ্ঠ পুত্র শাহজী দেখিতে বড় সুশ্রী ছিলেন, যাদব রাও এই বালকটিকে সোহাগ করিতেন এবং সঙ্গে করিয়া অন্তঃপুরে লইয়া যাইতেন। একদিন হোলীর সময় যাদব রাও নিজ বৈঠকখানায় বসিয়া বন্ধুবান্ধব অনুচরগণ লইয়া নাচ-গান উপভোগ করিতেছিলেন। পাঁচ বৎসরের বালক শাহজীকে এক কোলে এবং নিজের তিন বছরের কন্যা জীজা বাঈকে অপর কোলে বসাইয়া তাহাদের হাতে আবীর দিলেন এবং শিশু দুটির হোলী খেলা দেখিয়া হাসিতে হাসিতে বলিলেন, “ভগবান মেয়েটিকে কি সুন্দর করিয়াই গড়িয়াছেন। আর শাহজীও রূপে ইহারই সামিল। ঈশ্বর যেন যোগ্যে যোগ্যে মিলন ঘটান!”

 যাদব রাও হাসির ভাবে একথা বলিলেন, কিন্তু মালোজী অমনি দাঁড়াইয়া উচ্চস্বরে কহিলেন, “আপনারা সকলে সাক্ষী, যাদব রাও আজ তাঁহার কন্যাকে আমার ছেলের সঙ্গে বাগদত্তা করিলেন।” একথা শুনিয়া যাদব রাও ক্ষুণ্নমনে মেয়ের হাত ধরিয়া অন্তঃপুরে চলিয়া গেলেন; অন্যদিনের মত শাহজীকে সঙ্গে লইলেন না।

 যাদব রাও-এর পত্নী গিরিজা বাঈ অতি বুদ্ধিমতী ও তেজস্বী বীর রমণী। (১৬৩০ সালে যখন নিজাম শাহ বিশ্বাসঘাতকতা করিয়া দরবার মধ্যে হঠাৎ তাঁহার স্বামীকে খুন করেন, তখন গিরিজা বাঈ এই দুঃসংবাদে অভিভূত না হইয়া তৎক্ষণাৎ পরিবারবর্গ অনুচর ও ধন-সম্পত্তি লইয়া অশ্বপৃষ্ঠে রাজধানী হইতে বাহির হইলেন এবং দলবদ্ধভাবে কুচ করিতে করিতে নিরাপদ স্থানে পৌছিলেন। শত্রুপক্ষ তাঁহাকে বন্দী করিতে অথবা তাঁহাদের সম্পত্তি লুঠিতে পারিল না। মুসলমান ইতিহাস-লেখকেরা ঐ সময়ে তাঁহার স্থিরবুদ্ধি ও সাহসের খুব প্রশংসা করিয়াছেন।)

 হোলীর মজলিসে যাহা যাহা ঘটিয়াছিল সমস্ত শুনিয়া গিরিজা বাঈ