পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৮২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৭৮
শি বা জী

নেতা স্বীকার করিয়া সকলে হক মানিত। হাবশী জাতি ভারতে বল-বিক্রম, শ্রম ও কষ্ট সহ্য করিবার শক্তি, যুদ্ধ ও রাজ্যশাসনে সমান দক্ষতা, এবং প্রভুভক্তির জন্য বিখ্যাত ছিল। আর, দৃঢ় স্থির মন, লোক চালাইবার ক্ষমতা, এবং জলযুদ্ধে পরিপক্কতায় ইউরোপীয় ভিন্ন অপর সব জাতি অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। ইহাব। সিদ্দি। অর্থাৎ সৈয়দ বা উচ্চবংশজাত) নামে পরিচিত ছিল।

শিবাজী ও সিদ্দিদের শক্রতার কারন

 জঞ্জিরার পূর্বদিকের তীরভূমি কোলাবা জেলা। এখানে হাবশীদের খাদ্য জন্মে, রাজস্ব সংগ্রহ হয়, অনুচরগণ বাস করে। শিবাজী উত্তর কোঁকনে কল্যাণ, অর্থাৎ বর্তমান খানা জেলা, অধিকার করিয়া তাহার পরই কোলা জেলায় প্রবেশ করায়, হাবশীদের সহিত তাঁহাব সংঘর্ষ হইল। ইহা অনিবার্য্য; কারণ এই তটভূমি হারাইলে হাবশীরা না খাইতে পাইয়া মারা পডিবে; সুতরাং তাহারা দণ্ডা-বাজপুরী নিজ হাতে রাখিবার জন্য প্রাণপণ লড়িতে থাকিল। অপর পক্ষে, শিবাজীও জানিতেন যে তটভূমি ও জঞ্জিরা দ্বীপ হইতে হাবশীদের তাড়াইতে বা অধীন করিতে না পারিলে তাহার কোঁকন প্রদেশের স্থলভাগও অসম্পূর্ণ, অরক্ষিত, হইয়া পডিয়া থাকিবে; এই শত্রুরা জাহাজে করিয়া যেখানে সেখানে নামিয়া গ্রাম লুঠ ও প্রজাদের দাস করিয়া লইয়া যাইবে। “ঘরের মধ্যে ইদুর যেমন, সিদ্দিরাও ঠিক সেই ধরণের শত্রু” (সভাসদ), বিশেষত', তাহারা হিন্দু প্রজাদের প্রতি অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে অত্যাচার করিত, ব্রাহ্মণদের ধরিয়া মেথরের কাজ করাইত, সাধারণ লোকদের নাক-কান কাটিয়া দিত। আর, ঐ দ্বীপের ও দুর্গের আশ্রয়ে নিজ জাহাজ রাখিয়া সমুদ্রে যখন-তখন মারাঠী জাহাজ ধরিতে পারি।