পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮২
শি বা জী

 শিবাজীর অনেকগুলি জাহাজ তাহার নিজের এবং প্রজাদের মাল লইয়া, আরবের মোচা, পারস্যের বসরা, ইত্যাদি বন্দরে যাত্রা করিয়া নানাদেশে বাণিজ্য করিতে লাগিল। দক্ষিণের আট-দশটা বন্দর তাহার বাণিজ্যপোতের কেন্দ্র ও বিশ্রামস্থল ছিল। আর, তাহার যুদ্ধের নৌকাগুলি যথাসম্ভব সমুদ্রে অরক্ষিত শত্রু-পোত এবং কুলে অন্যান্য রাজার বন্দর লুঠ করিত। সুরত হইতে বাদশাহর প্রজাদের জাহাজগুলি তীর্থযাত্রী লইয়া মক্কা যাইবার পথে শিবাজীর দ্বারা আক্রান্ত হইত, কখন ধরা পড়িত। অবশেষে, আওরংজীব এই-সব জাহাজ রক্ষা, পশ্চিমসমুদ্রে পাহারা দেওয়া এবং শিবাজীর নো-বল দমন করিবার ভার অনেক টাকা বেতনে সিদ্দিদের উপর দিলেন।

জঞ্জিরাব বিপ্লব এবং সিদ্দি কাসিমেব দণ্ডা জয়

 শিবাজী যতদিন বাঁচিয়া ছিলেন প্রায় প্রত্যেক বৎসরই জঞ্জিরা আক্রমণ করিতেন; এই সকল একঘেয়ে নিষ্ফল চেষ্টার বিস্তারিত বিবরণ দেওয়া অনাবশ্যক। ১৬৬০-৭০ সালে তিনি জিদের সহিত অতি ভীষণ যুদ্ধ করিয়া সিদ্দি-সর্দার ফতই খাঁকে অতিষ্ঠ করিয়া তুলিলেন; অন্নাভাবে জঞ্জিরার পতন হয় আর কি! অথচ সিদ্দিদের উপরেব রাজা আদিল শাহর নিকট হইতে কোনপ্রকার সাহায্যের আশা নাই। তখন ফতহ, খাঁ টাকা ও জাগীর লইয়া শিবাজীকে ঐ দ্বীপ ছাড়িয়া দিতে সম্মত হইলেন। কিন্তু অপর তিনজন সিদ্দি-প্রধান তাঁহাকে বন্দী করিয়া জঞ্জিরা ও সিদ্দি জাহাজগুলির কর্ত্তৃত্ব নিজ হাতে লইলেন। মুঘল-বাদশাহ সিদ্দিকে পুরুষানুক্রমে “ইয়াকুৎ খা” উপাধি ও বার্ষিক তিন লক্ষ টাকা বেতন দিয়া নিজ চাকর করিয়া, সমুদ্রে পাহারা দিবার ভার দিলেন। সিদ্দি কাসিম হইলেন জঞ্জিরার, আর সিদ্ধি খয়রিয়ৎ সূলভূমির শাসনকর্ত্তা, এবং সিদ্দি সম্বল জাহাজগুলির নেতা (য়্যাডমিরাল, আমীর-আল-বহর।)