পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজীর নৌবল, ইংরাজ ও সিদ্দিদের সহিত সংঘর্ষ
১৮৫

সিদ্দি সম্বল অন্যান্য হাবশীদের সঙ্গে ঝগড়া করায় তাহাকে নৌ-সেনাপতির পদ হইতে দূর করিয়া দেওয়া হইল; তিনি অবশেষে (১৬৭৭ সালের নবেম্বব-ডিসেম্ববে) স্বজাতির সঙ্গ ও জাহাজ ছাডিয়া নিজ পরিবার ও অনুচর লইয়া শিবাজীর অধীনে চাকরি লইলেন।

খালেবী দ্বীপ লইয়া ইংরাজের সহিত শিবাজীর যুদ্ধ

জঞ্জিরা-জয়ে হতাশ হইয়া শিবাজী নিজে একটি জলবেষ্টিত দুর্গ স্থাপন করিবার ইচ্ছায় কাছাকাছি আর একটি দ্বীপ খুঁজিয়া বাহির করিলেন। ইহার নাম খান্দেরী, বম্বের এগার মাইল দক্ষিণে এবং জঞ্জিরার ৩০ মাইল উত্তরে। ১৬৭৯ সেপ্টেম্বরে তাঁঁহআর দেড়শত লোক চারিটি কামান লইয়া ময়া-নায়কের অধীনে জাহাজে আসিয়া এই ছোট শূন্য দ্বীপটি দখল করিল, এবং তাড়াতাড়ি পাথর ও মাটির দেওয়াল তুলিয়া ইহার চারিদিক ঘিরিয়া দিল। রাজা এই-সব খরচের জন্য পাঁচ লক্ষ টাকা মঞ্জুর করিলেন। ইহাতে ইংরাজদের ভয় হইল, কারণ বম্বেতে যে-সব জাহাজ যাতায়াত কবে সেগুলি খাদেরে হইতে অতি স্পষ্ট দেখা যায় এবং শীঘ্র আক্রমণ করা সম্ভব। এই খান্দেরী শত্রুর অভেদ্য দুর্গ হইয়া উঠিলে, ইহার আশ্রয় হইতে মাঠা যুদ্ধ-জাহাজের পক্ষে সমুদ্রে ইংরাজবাণিজ্যপোত ধ্বস করা সহজ হইবেব।

 সুতরাং বম্বের ইংরাজদের সৈন্য ও রণপোত মারাঠাদের খাদেরী হইতে তাড়াইয়া দিতে আসিল। ১৯ সেপ্টেম্বর ১৬৭৯ ইংরাজ ও মারাঠাদের মধ্যে প্রথম যুদ্ধ হইল; ইংরাজ হারিলেন, কারণ ইহা প্রকৃত প্রস্তাবে যুদ্ধই ছিল। বড় বড় ইংরাজ-জাহাজগুলি তীর হইতে দূরে থামিয়া খাদেরী উপসাগরে ঢুকিতে দেরি করিতেছিল, কারণ তখও সেখানকার জলের গভীরতা মাপা হয় নাই। এমন সময়ে প্রধান সেনাপতির আজ্ঞা অমান্য করিয়া, লেফটেনাণ্ট ফ্রান্সিস থর্প মাত্র তিন