পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯০
শি বা জী

 ১৬৬৪ ডিসেম্বর মাসে শিবাজী রত্নগিরি জেলার দক্ষিণ-পূর্ব্ব অংশ, বর্তমান সাবন্ত-বাড়ী জমিদারী, দখল করেন। এখানকার ছোট ছোট দেশাই (জমিদার)-গুলি বিজাপুরের অধীন ছিল; তাহারা শিবাজীর ভয়ে সর্বস্ব ছাড়িয়া প্রথমে জঙ্গলে পরে গোয়াতে আশ্রয় লইল, এবং সেখানে বসিয়া নিজ নিজ রাজ্য ফিরিয়া পাইবার বিফল চেষ্টায় অনেক বার সৈন্য সংগ্রহ করিয়াছিল। তজ্জন্য শিবাজী রাগিয়া পত্র লেখায়, পোর্তুগীজ-রাজপ্রতিনিধি শেষে এইসব দেশাইকে নিজ এলাকা হইতে বাহির করিয়া দিলেন (মে ১৬৬৮)। ইহার পর কুডালের দেশাই লখম সাবন্ত(বর্তমান সাব-বাড়ী-রাজ্যের আদিপুরুষ এবং জাতিতে ভোসলে) শিবাজীর বশ্যতা স্বীকার করিয়া তাঁহার অধীনে জাগীরদার হইয়া নিজ জমিদারী ফিরিয়া পাইলেন, কিন্তু তাহাকে দুর্গ নির্মাণ করিতে ও নিজের সৈন্য রাখিতে নিষেধ করা হইল।

 রুস্তম-ই-জমান গোপনে শিবাজীর সহায়ক হওয়ায়, এমন কি মারাঠাদের সহিত একজোটে নিজ রাজার প্রজাদের নিকট হইতে লুঠকরা সম্পত্তি ভাগাভাগি করায়, ঐ প্রদেশে শিবাজীর বিরুদ্ধে দাঁড়াইবার মত কেহই রহিল না, সর্ব্বত্রই ধনী ও বণিকের। মারাঠাদের ভয়ে ত্রাহি ত্রাহি করিতে লাগিল, ঘরবাডী ছাড়িয়া পাইল, ঐ দেশের অত বড় ও বিখ্যাত বাণিজ্য প্রায় বন্ধ হইয়া গেল। কোন স্থানই তাঁহার গ্রাস হইতে রক্ষা পাইত না।

বসরুব এবং কাবোয়ার লুণ্ঠন

 বিদরের প্রধান বন্দর বসরুর (ম্যাপের Barcelore); এটা হিন্দুর রাজ্য, ইহার রাজা শিবাজীর নিকট কোন অপরাধ করেন নাই, এবং মহারাষ্ট্রের ত্রিসীমার কাছেও যাইতেন না। কিন্তু বাণিজ্যের ও শিল্পবিক্রয়ের ধনে ঐ অঞ্চলে বসরুর অতুলনীয় ঐশ্বর্য্যশালী হইয়া উঠিয়াছিল।