পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/১৯৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৯৪
শি বা জী

রক্ষা করিবার শক্তি বিজাপুরের রহিল না। সেই সুযোগে শিবাজী ১৮৭৫ সালে কানাড়া উপকূল স্থায়িভাবে দখল করিলেন।

 নয় হাজার সৈন্য লইয়া ৮ই এপ্রিল শিবাজী ফোণ্ডা দুর্গের অবরোধ শুরু করিয়া দিলেন। দুর্গস্বামী মহম্মদ খাঁ একমাস ধরিয়া মহা বীরত্ব ও সহিষ্ণুতার সহিত লড়িলেন। শিবাজী দুর্গ-প্রাকারের নীচে চারিটি সুড়ঙ্গ খুঁডিলেন; কিন্তু মহম্মদ খাঁ তাহার সবগুলি নষ্ট করিয়া দিলেন। তখন শিবাজী এক মাটির দেওয়াল তুলিয়া দুর্গের বাহিরে চারিদিক ঘেরিয়া ফেলিলেন; মারাঠা সৈন্য তাহার আড়ালে নিরাপদে থাকিয়া গুলি চালাইতে লাগিল; তিনি পরিখার এক জায়গায় ভরাট করিয়া দুর্গ দেওয়াল অবধি পথ করিলেন। আধ সের ওজনের পাঁচশত সোনার বালা গড়াইয়া বলিলেন, যে-যে সৈন্য দুর্গ-দেওয়ালে চড়িতে পারিবে তাহাদের উহা দেওয়া হইবে। অবশেষে কোন সাহায্য না পাওয়ায় একমাস পরে (৬ই মে) ফোণ্ডার পতন হইল। আশেপাশের মহালগুলি দখল করিতে শিবাজীকে সাহায্য করিবেন—এই শর্তে মহম্মদ খাঁ এবং চার-পাঁচজন প্রধানকে প্রাণদান করা হইল; দুর্গের আর সব লোককে বধ করা হইল। অল্পদিনের মধ্যে দক্ষিণে গঙ্গাবতী নদী পর্যন্ত ঐ জেলার সমস্তটা শিবাজীর অধিকারে আসিল।


 কিন্তু কানাড়া অধিত্যকায় অনেক যুদ্ধের পরও শিবাজীর অধিকার স্থায়ী হইল না। বিদনুরের রাণী মারাঠা-রাজাকে কর দিতে সম্মত হইলেন। তাহার পর বিদনুর-সোলার মধ্যে যুদ্ধ, বিজাপুর ওমরাদের হস্তক্ষেপ, মারাঠা-সৈন্যের লুঠ ইত্যাদিতে দেশটা অশান্তি ও ক্ষতি ভোগ করিতে লাগিল।