পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/২০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২০৩
শিবাজীর রাজ্য এবং শাসন-প্রণালী

শিবাজীর রাজ্য এবং শাসন-প্রণালী হিসাব লিখিত “সবনিস” উপাধিধারী এক শ্রেণীর কর্মচারী। ইহাদের পদ সামান্য হইলেও প্রভাব ছিল খুব বেশী। শিবাজীর কর্মচারীরা (বিশেষতঃ ব্রাহ্মণ সুদাব, থানাদার প্রভৃতি) অতি নির্লজ্জভাবে পীড়ন করিয়া ঘুষ লইত এবং রাজস্ব আত্মসাৎ করিয়া টাকা জমাইত।

শিবাজীর সৈন্য-সংখ্যা

ইংরাজ-যুগের পূর্ব্বেই আমাদের দেশে দুই রকম অশ্বারোহী সৈন্য ভর্তি করা হইত; যাহারা সম্পূর্ণভাবে রাজার চাকর এবং রাজসরকার হইতে অস্ত্র বর্মও অশ্ব পাইত তাহাদের নাম “পাগ”;আর যে-সব ভাড়াটে অশ্বারোহী নিজেই অস্ত্র বর্ম ও ঘোডা কিনিয়া, ডাক পড়িলে নানা রাজ্যে বেতনের লোভে কাজ করিত, তাহারা “সিলদার”। পাগা সৈন্যদের ফারসী ভাষায় “বার-গৗর” (= ভারবাহ) বলা হইত, ইহা হইতে আমাদের “বরগী” শব্দের উৎপত্তি। যে বৎসর বা যে অভিযানে যত লোক আবশ্যক, হইত, সেই অনুসারে রাজা কম বেশী সিলদার ভাড়া করিতেন।

 রাজ্যস্থাপনের গোড়ার দিকে শিবাজীর অধীনে এক হাজার (অথবা বারে শত) পাগা এবং দুই হাজাব সিলদার অশ্বারোহী ছিল। তাহার পর রাজ্যবিস্তার ও দূর দূর দেশ আক্রমণের ফলে তাঁহার সৈন্যদল ক্রমশঃ বাড়িয়া জীবনের শেষ বৎসরে দাঁড়াইয়াছিল—৪৫ হাজার পাগ। (১৯ জন সেনানীর অধীনে ২৯ দলে বিভক্ত) এবং ৬০ হাজার সিলাদার (৩১ জন সেনানীর অধীনে); আর এক লক্ষ মালে পদাতিক (৩৬ জন সেনানীর অধীনে)। এই পদাতিকগুলি বর্তমান সভ্যজগতের সৈন্যদের মত বারো মাস কুচকাওয়াজ করিত না বা রাজার কাজে সৈন্য-আবাসে আবদ্ধ থাকিত; তাহারা চাষের সময় নিজ গ্রামে গিয়া জমি চাষ করিত, আর বিজয়া দশমীর দিন বিদেশ আক্রমণ করিবার জন্য, অথবা যুদ্ধের