পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/২২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইতিহাসে শিবাজীর স্থান
২১৯

লিখিলেন (১৬৬৭)—“তুমি নিজকে রাজার রাজা। শাহানশাহ বাদশাহ) বল অব শিবাজীর মত একটা জামিদারক দুরন্ত করিতে পাবিলে না। আমি সৈন্য লইয়া ভারতবর্ষে যাইতেছি তোমাকে রাজ্য-শাসন শিখাইব।” শিবাজীর স্মৃতি কাঁটার মত আওরংজীবে হৃদয়ে আমবণ বিদ্ধ ছিল। মৃত্যুর পূর্বে বাদশাহ পাত্র বা প্রতি যে শেষ উপদেশ লিখিয়া যান, তাহাতে আছে—“দেশের সব খবর রাখাই রাজকার্য্যর সর্বপ্রধান অঙ্গ। এক দণ্ডের অবহেলা বহুবর্ষ ব্যাপী মনস্তাপের কারণ হয়। এই দেখ, অবহেলাব জন্য হতভাগ্য শিবাজী আমার হাত হইতে পলাইল, আর তাহার ফলে আমাকে আমরণ এই পরিশ্রম ও অশান্তি ভোগ করিতে হইল।”

 আশ্চর্য্য সফলতা এবং অতুলনীয় খ্যাতিতে মণ্ডিত হইয়া শিবাজী সেই যুগের ভারতে সর্ব্বত্রই হিন্দুদের পক্ষে এক নূন আশার উষা-তার রূপে দেখা দিলেন। একমাত্র তিনি হিন্দুদেব জাত, ও তিলকের, শিখা ও উপবীতের বক্ষক ছিলেন। আশা ভবে সকলেই তাহাব দিকে চাহিয়া থাকিত, তাহার নাম করিয়া সমগ্র জাতি মাথা তুলত।

মারাঠা রাজ্যে পতনের কারন

 তবে কেন শিবাজীর রাজনৈতিক অনুষ্ঠান স্থায়ী হইল না? কেন তাঁহার সৃষ্টি তাঁহার মৃত্যুর আট বৎসণের মধ্যেই ভাঙ্গিতে আরম্ভ হইল? কেন মারাঠারা এক রাষ্ট্র সঙ্ঘ (নেশন) হইতে পারিল না? কেন অন্যান্য ভারতীয় রাজন্য ও জাতির মত তাহাবাও বিদেশীর বিরুদ্ধে ডাইতে অসমর্থ হইল?

 ইতিহাসের গভীব চর্চা করিয়া ইহার উত্তর পাওয়া যায়।

প্রথম কারণ —জাতিভেদের বিষ

 মারাঠা যখন শিবাজীর নেতৃত্বে স্বাধীনতা-লাভের জন্য খাড়া হয় তখন তারা বিজাতির অত্যাচারে অতিষ্ঠ, তখন তাহারা গরীব ও