পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/২২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ইতিহাসে শিবাজীর স্থান
২২৩

ইউরোপের সহিত ভারতের এই পার্থক্য আজও রহিয়াছে। ভারত ক্রমশঃ বেশী পিছনে পড়িতেছে, ~রণে বাণিজ্যে, শিল্প, সমবেত চেষ্টায় ইউরোপের তুলনায় দিন দিন অধিকতর ইন ও অসমর্থ হইতেছে। মাবাঠা ইতিহাস হইতে স্পষ্ট বুঝা যায় যে,

“দিনের দিন সবে দীন
ভারত হয়ে পবাধীন”

আমাদের জাতীয় দুর্দ্দশার সত্য কারণ নহে,— নৈতিক অবনতির ফল মাত্র।

তৃতীয় কারন—সুশাসনের স্থায়ী ব্যবস্থার অভাব

 মারাঠা বাজত্বে সময় সময় স্থান- বিশেষে সুশাসন ও প্রজার সুখসম্পদের পরিচয় পাওয়া যায় বটে, কিন্তু তাহা ব্যক্তিগত এবং অস্থায়ী। কোন বিশেষ রাজা বা মন্ত্রীর গুণে এই সুফল ফলিয়াছিল; আব তিনি চোখ বুজিবা মাত্র আবার আগের সব কি-শাসন ও অরাজকতা ফিরিয়া আসিয়া তাহার কার্য নষ্ট কবিয়া দিত। শিবজির পর শম্ভুজী, মাধব রাও পেশোয়ার পর রঘুনাথ রাও ইহারই দৃষ্টান্ত। এই কারণে মারাঠা - শাসনে দক্ষতার অভাব, ঘুষেব রাজত্ব, এবং হঠাৎ আগাগোড়া পরিবর্তন বড়ই বেশী দেখা যাইত। ইহাতে প্রজার সুখ-সম্পদ নষ্ট হইল, জাতির নৈতিক বল লোপ পাইল।

চতুর্থ কারণ -স্বদেশ অপেক্ষা স্বার্থের টান বেশি

 সে যুগের সমাজের অবস্থা এবং লোকের মনে প্রবৃত্তি যেরূপ ছিল তাহাতে জাতি অপেক্ষা নিজবংশ, স্বদেশ অপেক্ষ। পৈত্রিক মৌরসী মহাল (মারাঠী-ভাষায় “বতন”) বেশী মূল্যবান বোধ হইত। দেশে রাজা ও রাজবংশের ঘন ঘন পরিবর্তনের ফলে অনেক স্থলে জমির স্বত্ব বড় অনিশ্চিত এবং গোলমেলে হইয়া উঠিয়াছিল; একই গ্রামের উপর