পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
২৪
শিবাজী

এই কয় বৎসর রাজা অচল, পুতুলের মত; রাণী বড়ি সাহিবা শাসনকার্য্য চালাইতে লাগিলেন, রাজ্যের কেন্দ্রে জীবনীশক্তি রহিল না।

 ইহাই ত শিবাজীর পরম সুযোগ। এই বৎসর তিনি বাজী পাসলকর যেসাজী কঙ্ক এবং তানাজী মালুসরেকে কতকগুলি মাব্‌লে পদাতিকের সহিত পাঠাইয়া বিজাপুর-রাজার পক্ষের কিলাদার (দুর্গস্বামী)-কে ভুলাইয়া তোরণা[১]দুর্গ দখল করিলেন। এখানে দুই লক্ষ হোণ রাজার খাজনা জমা হইয়াছিল, তাহা শিবাজীর হাতে পড়িল। তোরণার পাঁচ মাইল দক্ষিণ-পূর্ব্বে ঐ পর্ব্বতের অপর এক চূড়ায় তিনি রাজগড় নামক একটি নূতন দুর্গ গড়িলেন, এবং তাহার নীচে ক্রমান্বয়ে তিনটি স্থানে জমি সমান করিয়া দেওয়াল দিয়া ঘিরিয়া ‘মাচী', অর্থাৎ রক্ষিত গ্রাম নির্ম্মাণ করিলেন।

প্রথম রাজ্য বিস্তার

 দাদাজী কোণ্ডদেবের মৃত্যুর পর (১৬৪৭) শিবাজী সর্ব্বপ্রমে পিতার ঐ প্রদেশস্থ সমস্ত জাগীর হস্তগত করিয়া একটি সংলগ্ন একচ্ছত্র রাজ্যস্থাপন করিতে চেষ্টা করিলেন। পূণার ১৮ মাইল উত্তরে চাকন দুর্গের অধ্যক্ষ ফিরঙ্গ জী নরসালা শিবাজীকে প্রভু বলিয়া স্বীকার করিলেন; বারামতী ও ইন্দাপুর নামক দক্ষিণ-পূর্ব্বদিকের দুইটি ছোট থানার কর্ম্মচারিগণও শিবাজীর অধীনে আসিল।

 তাহার পর শিবাজী বিজাপুর-রাজ্য হইতে দেশ কাড়িয়া লইয়া নিজ অধিকার-সীমা বাড়াইতে লাগিলেন। পুণার ১১ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে কোণ্ডানা দুর্গ বিজাপুর-রাজার ছিল; ইহার কিলাদার ঘুষ লইয়া দুর্গটি শিবাজীর হাতে ছাড়িয়া দিল।

  1. পুণা হইতে ২৫ মাইল দক্ষিণ-পশ্চিমে।