পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজীর অভ্যুদয়
২৭

করিলেন যে, যদি বাদশাহ শাহজীর পূর্ব্ব অপরাধ (অর্থাৎ ১৬৩৩-৩৬ পর্যন্ত বাদশাহের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করা) ক্ষমা করেন এবং ভবিষ্যতে শাহজী ও তাঁহার পুত্রগণকে রক্ষা করিতে সম্মত হন, তবে যুবরাজ অভয়-পত্র পাঠাইলে শিবাজী গিয়া মুঘল-সৈন্যদলে চাকরি করিবেন। কয়েকমাস ধরিয়া চিঠি লেখালেখি এবং দূত-প্রেরণের পর ১৬৪৯ সালের ৩০ নভেম্বর মুরাদ শিবাজীকে জানাইলেন যে, তিনি শীঘ্রই বাদশাহর নিকট যাইবেন এবং তথায় সাক্ষাতে শিবাজীর প্রার্থনা নিবেদন করিয়া সম্রাটের হুকুম লইবেন। এইরূপে এক বৎসর নষ্ট হইল। ইতিহাস হইতে বোঝা যায় যে, বাদশাহ শিবাজীর প্রার্থনায় কর্ণপাত করেন নাই। বিজাপুর-রাজ্যের সেনাপতি আহমদ খাঁর অনুরোধে এবং বাঙ্গালোর, কোণ্ডানা ও কন্দর্পী এই তিনটি দুর্গ সমর্পণ করিবার ফলস্বরূপ আদিল শাহ শাহজীকে মুক্ত করিলেন (১৬৪৯ সালের শেষে)। তাহার পর কিছুকাল তিনি মহীশূরের বিদ্রোহী জমিদার (পলিগর)গণের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করিয়া তাহাদের পুনরায় বিজাপুরের অধীনে আনেন এবং তথায় ও মাদ্রাজ অঞ্চলে বিজাপুরের ওমরা-স্বরূপ জাগীর পান।

 শাহজী জামিনে খালাস পান; সুতরাং পিতা পাছে আবার বিপদে পড়েন, এই ভাবিয়া শিবাঙ্গী ১৬৫০ হইতে ১৬৫৫ পর্যন্ত শান্তভাবে কাটান, বিজাপুর সরকারকে কোনমতে ক্ষুণ্ন করেন নাই।

 কিন্তু এই সময়ে তিনি পুরন্দর দুর্গ হস্তগত করেন। এটি “নীলকণ্ঠ নায়ক” উপাধিধারী এক ব্রাহ্মণ পরিবারের জাগীর ছিল। এসময়ে নীলোজী, শঙ্করাজী ও পিলাজী নামক তিন ভাই একান্নভুক্ত শরিকরূপে উহার মালিক ছিলেন। জ্যেষ্ঠভ্রাতা নীলোজী বড় কৃপণ ও স্বার্থপর, তিনি অপর দুই ভাইকে তাহাদের ন্যায্য প্রাপ্য আয় ও ক্ষমতা দিতেন