পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৩০
শিবাজী

ধরিয়া সাহসের সহিত যুদ্ধ করিয়া অবশেষে দুর্গ ছাড়িয়া দিল (১৫ জানুয়ারী ১৬৫৬)। চন্দ্ররাও-এর দুই পুত্র ও পরিবারবর্গ বন্দী হইল। কিন্তু তাঁহার আত্মীয় ও কার্য্যাধ্যক্ষ হনুমন্ত রাও মোরে ঐ বংশের অনুচরদের একত্র করিয়া নিকটবর্তী একটি গ্রামে আত্মরক্ষা করিতে লাগিলেন। শিবাজী দেখিলেন, “হনুমন্তকে হত্যা না করিলে জাবলীর কণ্টক দূর হইবে না।” তিনি শম্ভুজী কাবজী নামক এক মারাঠা-যোদ্ধাকে দৌত্যের ভাণ করিয়া হনুমন্তের নিকট পাঠাইলেন। কাবজী সাক্ষাতের সময় হনুমন্তকে খুন করিল। এইরূপে সমস্ত জাবলীপ্রদেশ শিবাজীর করতলগত হইল। তিনি এইবার দক্ষিণে কোলাপুর ও পশ্চিমে রত্নগিরি জেলা অধিকার করিবার সুযোগ পাইলেন। তাঁহার আরও এই একটি লাভ হইল যে, মাব্‌লে সৈন্য জুটাইবার ক্ষেত্র দ্বিগুণ বিস্তৃত হইল, কারণ এখন সাতারার পশ্চিম প্রান্তে ৬০ মাইল ব্যাপী পর্ব্বত ও উপত্যকা তাঁহার অধিকারে আসিল। মোরেদের সমস্ত সৈন্যসামন্ত এবং আট পুরুষের সঞ্চিত অগাধ ধনরত্ন তাঁহার হাতে পড়িল।

 মোর বংশের কয়েকজন লোক ধরা পড়েন নাই, শিবাজীর উপর প্রতিশোধ লইবার জন্য তাঁহারা ১৬৬৫ সালে জয়সিংহের সহিত যোগ দিয়াছিলেন।

শিবাজীর নূতন দুর্গ

 জাবলী গ্রামের দুই মাইল পশ্চিমে শিবাজী প্রতাপগড় নামে একটি দুর্গ নির্মাণ করিয়া তথায় ভবানী-মূর্ত্তি প্রতিষ্ঠা করিলেন। কারণ, আদি ভবানী দেবীর মন্দির ছিল তুলজাপুরে, বিজাপুর-রাজ্যের মধ্যে। এই প্রতাপগড়ের ভবানীই শিবাজীর অধিষ্ঠাত্রী দেবী হইলেন, তথায় তিনি অনেকবার তীর্থযাত্রা করেন এবং বহুমূল্য ধনরত্ন দান করেন।