পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজী

ঐ সহ্যাদ্রি পার হইয়া আরব-সমুদ্র পর্য্যন্ত বিস্তৃত যে লম্বা ফালি জমি তাহার উত্তরার্দ্ধের নাম কোঁকন, এবং দক্ষিণ ভাগ কানাড়া ও মালবার; এই কোঁকনে থানা, কোলাবা ও রত্নগিরি নামে তিনটি জেলা এবং সংলগ্ন সাবন্ত-বাড়ী নামক দেশী রাজ্য প্রায় দশ হাজার বর্গমাইল ব্যাপিয়া আছে। ইহার অধিকাংশ লোকে এখন মারাঠী বলে, কিন্তু তাহারা সকলেই জাতিতে মারাঠা নহে।

চাষবাস ও জমির অবস্থা

 মহারাষ্ট্র দেশে বৃষ্টি বড় কম এবং অনিশ্চিত; এজন্য অল্প শস্য জন্মে, এবং তাহাও অনেক পরিশ্রমের ফলে। কৃষক সারা বৎসর খাটিয়া কোনমতে পেট ভরিবার মত ফসল লাভ করে। ইহাও আবার সকল বৎসরে নহে। যে শুষ্ক পাহাড়ে দেশ, তাহাতে ধান হয় না, গম ও যব জন্মে অত্যন্ত কম। এ দেশের প্রধান ফসল এবং সাধারণ লোকের একমাত্র খাদ্য জোয়ারি, বাজ্‌রী এবং ভুট্টা। মাঝে মাঝে অনাবৃষ্টিতে এইসব গাছের চারা শুকাইয়া যায়, জমির উপরটা পুড়িয়া ধূলার রং হয়, সবুজ কিছুই বাঁচে না, অসংখ্য নরনারী এবং গরু-বাছুর অনাহারে মারা যায়। এইজন্যই আমরা এতবার দাক্ষিণাত্যে দুর্ভিক্ষের কথা শুনিতে পাই।

 পাহাড় বনে ঢাকা অনুর্ব্বর দেশ, কাজেই লোকসংখ্যা বড় কম। উত্তর-দক্ষিণে বিস্তৃত সহ্যাদ্রি পর্ব্বতশ্রেণী মেঘ পর্যন্ত মাথা তুলিয়া সমুদ্রে যাইবার পথ রোধ করিয়া দাড়াইয়া আছে, আর এই সহ্যাদ্রি হইতে পূর্ব্বদিকে কতকগুলি শাখা বাহির হইয়াছে। এইরূপে দেশটা অনেক ছোট ছোট অংশে বিভক্ত, প্রতি অংশের তিনদিকে পাহাড়ের দেওয়াল আর মাঝখান দিয়া পূর্ব্বমুখে প্রবাহিত কোন প্রাচীন বেগবতী নদী। এই খণ্ড