পাতা:শিবাজী - যদুনাথ সরকার.pdf/৯৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
শিবাজী ও আওরংজীবের সাক্ষাৎ
৯৩

 শিরাজী তখন জাফর খাঁর সহিত সাক্ষাৎ করিয়া দাক্ষিণাত্যজয়ের বন্দোবস্তের আলোচনা করিলেন। প্রধান মন্ত্রী বলিলেন, “বেশ ভাল।” কিন্তু তাঁহার স্ত্রী (শায়েস্তা খাঁর ভগিনী) অন্তঃপুর হইতে গোপনে বলিয়া পাঠাইলেন,—“শিবাজী আফজল খাঁকে হত্যা করিয়াছে,শায়েস্তা খাঁর আঙ্গুল কাটিয়া দিয়াছে, তোমাকেও বধ করিবে। শীঘ্র তাহাকে বিদায় কর।” মন্ত্রী তখন “আচ্ছা, আচ্ছা, বাদশাহকে বলিয়া সব সরঞ্জাম দিব”—এই বলিয়া তাড়াতাড়ি কথাবার্ত্তা শেষ করিলেন। শিবাজী বুঝিলেন, তিনি কিছুই করিবেন না।

 পরনি বাদশাহর হুকুমে আগ্রার কোতোয়াল ফুলাদ খাঁ শিবাজীর বাসার চারিদিকে পাহারা ও তোপ বসাইল; মারাঠারাজ সত্য সত্যই বন্দী হইলেন; তাঁহার বাসা হইতে বাহির হওয়া পর্য্যন্ত বন্ধ হইল।

শিবাজী পলায়নের অদ্ভুত পথ বাহির করিলেন

 সর আশায় জলাঞ্জলি দিয়া শিবাজী পুত্রকে বুকে ধরিয়া কান্নাকাটি করিতে লাগিলেন। তাঁহার সঙ্গীরা সান্ত্বনা দিবার অনেক চেষ্টা করিল।

 কিন্তু বেশীদিন এইভাবে গেল না। শিবাজীর অদম্য সাহস ও প্রখর বুদ্ধি শীঘ্রই প্রকাশ পাইল। তিনি নিজের মুক্তির পথ নিজেই বাহির করিলেন। প্রথমতঃ, তিনি সকলের কাছে লোক পাঠাইয়া জানাইতে লাগিলেন যে, তিনি বাদশাহর ভক্ত প্রজা, তাঁহার অসন্তোষের ভয়ে কাঁপিতেছেন। অপরাধ-মার্জ্জনালাভের আশায়, বাদশাহর নিকট সুপারিশ করিবার জন্য শিবাজী দরবারের অনেক সভাসদকে অনুরোধ করিলেন। ইতিমধ্যে তিনি নিজ রক্ষী-সৈন্যদলকে দেশে পাঠাইবার অনুমতি চাহিলেন; বাদশাহ ভাবিলেন, ভালই ত, আগ্রায় যত শত্রু কমে। সৈন্যেরা মহারাষ্ট্রে গেল, সেই সঙ্গে শিরাজীর সঙ্গীরাও অনেকে