পাতা:শিশু-ভারতী - অষ্টম খণ্ড.djvu/১০৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

--- ০-rাজ-আপ- --- গিয়া বৃষ্টির জন্য তাহাজের নিকট প্রার্থনা করিতে লাগিল "হে আমাদের বৃষ্টির দেবতা ! হে আমাদের আকাশের দেবতা, আমাদের প্রতি সদয় হও, আমাদের বৃষ্টি দাও ।” দেবতার সকাশে এই প্রার্থনা জ্ঞাপন করিয়া তাহারা দেশে ফিরিয়া আসিল । একদিন হঠাৎ আকাশের উত্তর পশ্চিম কোণে গাঢ় কালমেঘের সূচনা দেখা দিল। সকলেরই মন আজ হর্ষে উৎফুল্প। বহুদিন পর আজ বৃষ্টিপাত হইবে, আবার দেশ শস্যশ্যামল হইয়া হাসিয়া উঠিবে এই ভাবিয়া আবাল-বৃদ্ধ-বণিতা সকলেই আনন্দ্ৰে আপ্ল ত হইয়া উঠিল। তাহার হজরত হুকে বিক্রপ করিয়া বলিতে লাগিল, " কি হে হুদ, তুমি না বলিয়াছিলে, আমাদের পূজা পাৰ্ব্বণ, ধৰ্ম্ম কৰ্ম্মের জন্য তোমার দেবতা আমাদের প্রতি অসন্তুষ্ট হইয়া আমাদের উপর এই অনাবৃষ্টিরূপ অভিসম্পাত নামেল কবিয়াছে। ঐ দেখ, আমাদের দেবতা বৃষ্টিপাতেল জন্য আকাশে মেঘসঞ্চার করিয়াছেন। এখনই বারিপাত হইয়া দেশ শীতল হইবে। তোমার দেবতাই বা কোথায়, তাহার অভিসম্পাতই বা কোথায় ? হজরত হুদ বলিলেন, “ওহে দেশবাসিগণ, আমাৰ কথা মিথ্যা মনে করিও না। আল্লাহ জগতের স্বষ্টি ও পালনকর্তা ; তিনি তোমাদের জীবন দান করিয়াছেন, তিনিই তাহার রক্ষার ব্যবস্থা করিতে পারেন ; তিনিই অনাবৃষ্টির মালেক, তিনিই বৃষ্টির মালেক। তোমরা সাবধান হও, নতুবা এখনই মহাশাস্তি নামেল হইবে।” হঞ্জের বাণী শুনিয়া সকলে তাহাকে পাগল বলিয়া তাড়াইয়া দিল । দেখিতে দেখিতে সমস্ত আকাশ ভীষণ কাল মেঘে ঢাকিয়া ফেলিল। আরো মনে করিল প্রচুর বারিপাত হইয়া দেশ ভাসিয়া যাইবে। সন্ধ্যা হইয়া আসিল ; মেঘ আরও গাঢ় হইয়া শীতল বাতাস বহিতে লাগিল। বহুদিন অনাবৃষ্টিতে দেশ আগুনের মত গরম হইয়াছিল। শীতল বাতাসে দেশ ঠাণ্ডা হইয়া গেল, শরীর জুড়াইল। সকলে পরম সুখে ঘুমাইয়া পড়িল। রাত্রির অন্ধকার ঘনীভূত হইতেই বাতাস ভীষণ আকার ধারণ করিল ; ঘর বাড়ী উড়িয়া যাইতে লাগিল। গাছপালা ভাঙ্কিয়া চুরমার


ՀեԵԳ --------

হইল ; দেশময় এক মহাআতঙ্কের স্বষ্টি হইল। সমস্ত রাত্রি অতিবাহিত হইল কিন্তু ঝড়ের বেগ কমিল না। ঘর বাড়ী গাছপালার সহিত কত প্রাণীর জীবন-লীলা সাঙ্গ হইল কে তাহার ইয়ত্তা করে। পরদিনও ঝড় কমিল না। এইরূপে ক্রমাগত সাত দিন ধরিয়া ঝড় প্রবল বেগে বহিল। অষ্টম রাত্রিতে বেগ কিঞ্চিত কমিয়া আসিল । অষ্টম দিন সকাল হইতে প্রকৃতি আবার শান্ত ভাব ধারণ করিল। সাত দিনের প্রবল ঝড়ে দেশের ঘরবাড়ী, গাছপালা, পশুপক্ষী সমস্ত ধ্বংস হইয়া গেল কোথাও জনমানবের চিহ্ন বহিল না। ঝড়ের প্রাবম্ভেই হজরত হুদ তাহার সঙ্গিগণ লইয়া এক নিভৃত পৰ্ব্বত গুহায় আশ্রয় লইয়াছিলেন। দেশবাসিগণের মধ্যেও কেহ কেহ পৰ্ব্বতগুহায় আশ্রয় লইয়াছিল। ঝড়ের শেষে হুদ ও র্তাঙ্কার সঙ্গিগণ পৰ্ব্বত গুহা হইতে বাহির হইয়া দেখিলেন, জনপদ ধ্বংসস্ত পে পরিণত হইয়াছে। রাস্তা-ঘাট, বনজঙ্গল আচ্ছন্ন হইয়া গিয়াছে । অবিশ্বাসিগণের মধ্যে যাহাবা পৰ্ব্বত গুহায় আশ্রয় লইয়া প্রাণে বাচিয়াছিল, তাহারা দেশের এবং জাতির দুর্দশা দেখিয়া হুদেব আনুগত্য স্বীকার করিল। হজরত ছদ তাহাদিগকে বলিলেম “শ্রাতৃগণ, তোমরা আমার উপদেশ না শুনিয়া কল্পিত দেবদেবীর পূজা করিয়াছিলে, এবং তাহাদের নিকট হইতে সাহায্য আশা করিয়াছিলে, কিন্তু এখন বুঝিলে তোমরা মহাভুল করিয়াছ। এই ভুলের জন্ত ইহ জীবনে শাস্তিভোগ করিলে, পর জীবনেও ইহা অপেক্ষা ভীষণতর শাস্তিভোগ করিতে হইবে। এখনও সময় আছে "সরল সোজা” পথে চল । ঝড়, বৃষ্টি, মেঘ, বজ্র, ভূমিকম্প, অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি রোগ-শোক প্রভৃতির পৃথক দেবতা নাই। এক আল্লাই এই সমস্তের বিধানকর্তা । সুতরাং একমাত্র তাহারই উপাসনা করিলে তাহারই সাহায্য প্রার্থনা করিলে তাহার উপর নির্ভর করিলে মানুষ সকল বিপদ হইতে রক্ষা পায়। অতএব তোমরা এক আল্লার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন কর ; তিনিই তোমাদিগকে প্রতিপালন করিবেন।” ছদের উপদেশে এইবার তাহাজের জ্ঞানচক্ষু ফুটিল। তাহারা এক মাল্লার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করিয়া 一呎