পাতা:শিশু-ভারতী - দ্বিতীয় খণ্ড.djvu/৩৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

-------- পেন্সিলটার দিকে তাকাই, তবে মনে হয় যে, তা ডাইনে বঁাকা, কিন্তু ঘুরে গিয়ে অন্য দিক থেকে তাকালে মনে হয় যে, তা নয়-পেন্সিলটা বাদিকে বঁাক। এমনি, আমাদের জায়গা ৰাদলের সঙ্গে সঙ্গে পেন্সিলটাও নানাদিকে বেষ্কৃতে থাকে-একটার সঙ্গে আর একটার কোন মিল থাকে না । মিল দেখেই কি তাহলে আমরা সত্যি-মিথ্যা ঠিক করি ? তা বলেও কিন্তু নিস্তার নেই, কারণ, তখন নতুন নতুন নানা প্রশ্ন ওঠে। কোনো জিনিষের সঙ্গে যে অল্প কোনো জিনিষ খাপ খাচ্ছে, তা জানা যায় কি করে ? অার কেহ বা তা জানে ? আমি আজ ভোরে উঠে দেখলাম যে, মেখ করেছে, পূৰ্ব্ব আকাশে স্বর্য্যের দেগা নেই। কাল ধে সুৰ্য্য উঠেছিল সে-কথা মনে রইল কি ক’রে ? আর যে-অামি কাল স্বৰ্য্য ওঠা দেখেছিলাম, সে-অমির সঙ্গে আজ সকালকাব আমির কি সম্বন্ধ ? স্বপ্নে তো দেগেছি যে, কখনো আমি রাজা, কখনো আমি জাহাজের কাপ্তেন সেক্ট সব “আমির” সঙ্গেই বা অামার আজ সকালকার জেগে থাকা আমির কি সম্বন্ধ ? এ-সব অালোচন পবে আর একদিন করা যাবে --আজকে কেবল আর একটা মুস্কিলের কথা বলৰ । সত্যি-মিথ্যা সম্বন্ধে সন্দেহ না হ’লে মিল দেখার কথাই ওঠে না, অন্ত ঘটনার সঙ্গে কোনো ঘটনার মিল আছে কি না, সে বিষয়ে আমরা কিছু ভাবিই ন । ধর, আজ যে টেবিলে কাগজ বেথে লিগছি, এ টেবিল যে সত্যি সত্যি টেবিল, তা জানতে আমাদের কালকের কথা মনে করার কোনো দরকার হয় না—কাল কি দেখেছি না দেখেছি, সে-সব কথা খেয়ালই করি না । তা ছাড়া সন্দেহ যদি ওঠেও, তবু কেবলমাত্র এক জিনিষের সঙ্গে অন্য জিনিষের খাপ খাওয়াকেই কি আমরা সত্যি মিথ্যা বলি ? সত্যি মিথ্যা আমরা ঠিক করি তাই দিয়ে, কিন্তু সত্যি-মিথ্যার মানে খাপ খাওয়া লা না খাওয়া নয়। সতি ললে জিনিষটা খাপ খায়, খাপ খায় বলে তা সত্যি নষ । টেবিলটা সত্যিই টেবিল বলেই রোজ আমরা তাকে দেখি, রোজ আমরা তাকে দেখি বলেই তা সত্যি সত্যি টেবিল নয় । অনেকে আবার তাই বলে যে, ও-সব খাপ খাওয়া না-খাওয়া কাজের কথা নয়। আসলে আমাদের মনট। হচ্ছে আয়নার মত—তাতে বাইরের জিনিষের ছায়া পড়ে বলেই আমরা জানতে পাই । সে ছায়া যখন ঠিক ছায়া, তখন আমাদের জানাকে বলি সত্যি—তা ---

  • le > -

-Sęn নইলে বলি ভুল। তোমরাও হয় তো প্রথমে এমনি ক’রেই ভাৰো। জিনিষগুলি রয়েছে বাইরে, আমরা তাদের বিষয় চিত্তা করি, আমাদের চিন্তা যখন জিনিষের সঙ্গে মেলে, তখনই তা ঠিক হয়। ব্যাপারটা যদি এত সহজ হ’ত, তবে তা নিয়ে মাথা ঘামানোর কোনো অর্থ ষ্ট হ’ত না। কিন্তু আমাদের মন যদি আয়নার মতনই ছয়, তবে ভুল সম্ভব হয় কি ক’বে ? হয় জিনিষের ছায়া তাতে পড়ে, তা নইলে পড়ে না, কিন্তু সত্যি-মিথ্যার কথা ওঠে কেমন ৰ’রে ? তা ছাড়া সত্যি-মিথ্যা কোনো রকম ক’রে সম্ভব হলেও আমরা তার কথা জানব কেমন ক’রে ? আমাদের মনে রয়েছে ছায়া—আমরা সেই ছায়াকেই জানি, কিন্তু তাহ’লে সে ছায়া জিনিষের ঠিক ছায়। কি না, সে-কথা ঠিক হবে কেমন ক’রে ? অার যদি বল যে জিনিষগুলি জানি বলেই ছায়া ঠিক না ভুল তা বুঝতে পারি, তবে আর তার ছায়ার দরকার কি ? জিনিষগুলিই যদি জানি, তবে মনের মধ্যে তাদের ছায়ার তো কথাই ওঠে না-মনও তা’হলে আয়নাল মতন নয়, তাতে ছবি পড়তে পারে না । বরং বলতে পার যে, মনট কাচের মতন —তার মধ্য দিয়ে সব পরিস্কার দেখা যায়। তা বললে কিন্তু ভুল কেমন ক’রে হয় সে-কথা আর বোঝানো যায় না। কাচ যদি পরিস্কার হয়, তবে তাব মধ্য দিয়ে আমবা জিনিষ দেখি, না দেখতে পেলে বলি যে কোনো ঞ্জিনিষ নেই-কিন্তু ভুলের তো কোনে কথা ওঠেন। এপন যদি বল যে, কাচও তে নানা রকম হয়কোনোটার মধ্য দিয়ে সব জিনিষকে বড় দেথায়, কোনোটার মধ্য দিয়ে সব ছোট দেখায় ; রঙীন কাচের মধ্য দিয়ে সব জিনিষকে রঙীন দেখায় । তার পরে আবার এক রকম কাচ আছে যে, তার ঠিক মধ্য দিয়ে তাকালে জিনিষটাকে ঠিক দেখা যায়— একটু এদিক ওদিক হ'লেই নানাভাবে বেকেচুরে যায়। মনটাও হচ্ছে তেমনি কঁচি-তার ঠিক মধ। দিয়ে তীকালে জিনিষ ঠিক জানি । তা নইলেই নানা রকম ভুল হয় । এ কথা বলেও কিন্তু নিস্তার নেই। আমরা ইচ্ছে করলে কাঁচ সরিয়ে ফেলতে পারি, তাই একবার এমনি ক’রে দেখে, আবার কাচের মধ্য দিয়ে দেখে বলি যে, এ কাচটার মধ্য দিয়ে দেখলে সব জিনিষ বড় দেখায় বা রঙীন লাগে । কিন্তু কাচ যদি না সরানো যায় ? ধর, একেবারে ছেলেবেলায় তোমাদের চোথে --