পাতা:শিশু-ভারতী - সপ্তম খণ্ড.djvu/৩৮৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শিশু-ভারতী ভ্রমণ করার পর মক্কার পশ্চিম দিগবর্তী জেদা নামক স্থানে উপস্থিত হইলেন এবং ক্রমে তিনিও তথ হইতে পূৰ্ব্বদিকে অগ্রসর হইয়৷ সেই আরাফার (Arafa) মাঠে উপস্থিত হইলেন। হজরত আদম প্রার্থনা শেষ করিয়া চক্ষু ফিরাইতেই দেখিলেন তাঙ্কারই নিয়ে, উপত্যকায় তাহার প্রিয়তমা পত্নী দণ্ডায়মান। উভয়ে উভয়ের দৃষ্টিপথে পতিত চুইলেন। হজরত আদম ত্বরিত গতিতে পৰ্ব্বতশিখর হইতে অবরোহণ করিয়া পত্নী সন্নিধানে উপস্থিত হইলেন। চতুর্দিকে পৰ্ব্বতবেষ্টিত বিস্তৃত আরাফার (Arafa) মাঠে উভয়ের শুভ-মিলন হইল। এই মিলনের স্থানকে আজিও আরাফ (Arafa) নামে অভিহিত করা হয়। আরাফা শব্দের অর্থ মিলন। সুদীর্ঘ বিচ্ছেদের পর পুনর্মিলনে উহাদের অন্তরে যে অনির্বিচনীয় আনন্দ-প্রস্তুত কৃতজ্ঞতার উদয় হইয়াছিল তাছার পরিমাণ করে কার সাধ্য ? একদিন বুদ্ধিলমে যাহার আদেশ অমান্ত করিয়া বৃন্তচু্যত পুষ্পের ন্যায় স্বর্গভ্রষ্ট হইয়াছিলেন, যাহার কোপে উভয়ে বহুদিন বিচ্ছেদযন্ত্রণা সহ করিয়াছিলেন, বহু ক্লেশ ভোগের পর আবার তঁহারই অপার কর্ণায় পুনৰ্মিলিত হাওয়ায় তাহারই চরণে স্বত: তাহদের মস্তক অবনত হইয়া আসিল। সেই দয়ার পাহাড়ে উঠিয়া, উভয়ে কৃতজ্ঞতার চিহ্নস্বরূপ, হৃদয়ের অফুরন্তু ভক্তির ধারা সেই দয়াময়ের চরণে ঢালিয়া দিলেন। আজিও হাজীগণ তাহদের স্মৃতিরক্ষার্থে ঐ স্থানে দুই রেফা-অাং নফল । Nafal ) নামাজ পড়েন এবং দয়াময় আল্লার নিকট স্বীয় পাপের ক্ষমা ভিক্ষ চান । কৃতজ্ঞতা হৃদয়ের স্বাভাবিক ধৰ্ম্ম । বনের পশুও উপকারীর নিকট হৃদয়ের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন কবিয়া থাকে। সুতরাং বিবেকবৃদ্ধিসম্পন্ন মাহ্য তাঙ্গার উপকারীর নিকট হৃদয়ের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করবে তাছা অতি স্বাভাবিক। অস্তরের এই রতজ্ঞতা ছতেই মাচুধের মনে প্রথম পৰ্ম্ম ভাবের উদয় ইয়াছে। চজ, স্বৰ্য্য, মেঘ, বৃষ্টি, ঝটিকা ভূমিকম্প রোগ-শোক প্রভৃতির অপরিমেয় উপকার ও প্রবেীপের বিসয় স্মরণ করিয়া ঐগুলিকে সন্তুষ্ট করিবার জন্ত মানবের মনে একটা আকাজ জাগিয়াছিল। এবং ঐ গুলির সৃষ্টি ও বিধানকওঁ, নিরাকার আল্লার সন্ধান যাহারা পায় নাই, তাহার ঐ গুলিকেই ঈশ্বরজ্ঞানে পূজা করিয়াছে। এই ভাবেই প্রকৃতি পুঙ্গার উদ্ভব হইয়াছে। কিন্তু একবার বাস্তবের মধুর আস্বাদ গ্রহণ করিলে মন আর অবস্তিবের শত চাকচিক্যে বিমোহিত হয় না। আদম ও হাওয়ার চোখের উপর দিয়া প্রকৃতির কত লীলা-তরঙ্গ চলিয়া যাইতে লাগিল, তাছাদের মনশ্চক্ষু লে দিকে ক্ৰক্ষেপও করিল না। তাহারা ত আজ বিবেকের পাঠশালার নবীন ছাত্র। চজস্বর্ণ্যের অপূৰ্ব আভা, বৃক্ষলতাদির অপরূপ শোভা বিষ্টঙ্গের মধুর সঙ্গীত, ফল শস্তের মিষ্ট মধুর স্বাদ, ঝড়বৃষ্টির নিঠুব প্রকোপ, রোগ-শোকের মৰ্ম্মস্থদ । ব্যথা, কিছুতেই তাছাদের মন বিচলিত হইল না— ' তাহদের মন কোনটকে দেবতাঞ্জানে স্তুতি করিতে ইচ্ছা প্রকাশ করিল না। যে আরাফার (Arafa) মাঠে আশাতীত ভাবে উভয়ের মিলন ঘটিল, আদম ও হাওয়ার মন দিব্যজ্ঞানে উদ্বাসিত না হলে হযত সেই আরাফার মাঠ বা লেই জবলরহমৎ পৰ্ব্বতকেই উপান্ত জ্ঞানে পুজা করিত ! কিন্তু সেই কৃতজ্ঞতার চিচম্বরূপ, দিব্যালোে উদ্ভাসিত আদমের মন, সেই সৰ্ব্বশক্তিমান পরম দয়ালু নিরাকার আল্লার উপাসনা করিতে ব্যগ্র হইয়া উঠিল। সঙ্গে সঙ্গে তদুপযোগী একটা গৃহনিৰ্ম্মাণের কামনা ও ঠাহীর অন্তরে জাগিয়া উঠিল। কামনার সঙ্গে দৈবাদেশের দ্বার। স্থান নির্দিষ্ট হইল। তিনিও কাদার প্রলেপ দিয়া পাথরের উপর পাথর সঞ্জাইয়া, চার হাতের অমুচ্চ এবট দেয়াল দ্বারা নির্দিষ্ট স্থানটী ঘিরিয়া লষ্টলেন। কাবার উপাসনাগৃহের ভিত্তি প্রথম স্থাপিত হইল। ইহাই গৃহশিল্পের প্রথম আদর্শ। আদম তখনও কণিকাৰ্য্য শিখেন নাই। সুতরাং স্বভাবজ ফলমূৰাদি আহরণ করিয়াই জীধিক-নিৰ্ব্বাছ করিতেছেন । কিন্তু ইয়াতে আর কতদিন চলিবে ? মক্কার নিকটস্থ স্থানগুলির ফলমূলে আর তাহদের আহাৰ্য্য সঙ্কুলান হইতেছে না দেখিয়া ক্রমে উছার আহারান্বেষণে দূরবর্তীস্থানে ভ্রমণ করিতে লাগিলেন। উত্তরে আৰ্ম্মেনিয়ার কারাস্ক (Kar-su) পৰ্ব্বত হইতে উৎপন্ন হইয়া ভাইগ্রিস ও ইউফ্রেতিস নামক দুইটী নদী প্রায় সমান্তরাল ভাবে প্রবাহিত হইয়া পরিপ্তোপসাগরে পড়িয়াছে। এই দুইটী নদীর ՀԳ8Հ