পাতা:শুভদা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/১৪৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

བྱབྱ S8ክዎ বাধিয়া কিছু দিবসের জন্য শ্ৰীমান সদানন্দ বিদেশীযাত্ৰা করিল। শুভদার সংসার এখন তাহার সংসার হইয়াছে ; সুতরাং ইহার সমস্ত বন্দোবস্ত করিয়া যাইতে ভুলিল না এবং আরো, বিবাহের অপরাপর সরঞ্জাম প্ৰস্তুত করিয়া রাখিবার জন্য শুভদাকে বিশেষ করিয়া বলিয়া গেল। সেখানে যাইয়া সদানন্দ মৃত পিসীমাতার সমস্ত জমি-জমা বেশ করিয়া দেখিয়া শুনিয়া লইল,তাহার পর একজন মুরবি স্থির করিয়া এক কথায় তাহাকে সমস্ত বিক্রয় করিয়া অৰ্দ্ধ মাস কালের মধ্যেই হলুদপুরে পুনরায় ফিরিয়া আসিল । হরমোহনের সহিত লেখা-পড়া করিল, গহনা গড়াইল, জিনিসপত্র আনাইল, বিবাহের দিন স্থির করিল, তাহার পর সময় করিয়া সারদাচরণের সহিত সাক্ষাৎ করিল। এতদিন পৰ্য্যন্ত নিভৃতে তাহার সহিত দুটো কথা কহিবার সময় হইয়া উঠে নাই। আজ অনেক দিনের পরে দুজনেই আপোষে দুটো কথা কহিতে চাহিল, তাই হাত ধরাধরি করিয়া গঙ্গাতীরে একস্থানে আসিয়া উপবেশন করিল। উপবিষ্ট হইয়া সারদাচরণ বলিল, সদানন্দ, তোমার ছেলেবেলার কথা মনে পড়ে ? কতক কতক পড়ে বৈ কি। মনে পড়ে যখন আমি একজনকে বড় ভালবাসতাম, যখন দিবারাত্রি কেবল ঐ কথাই ভাবতাম, তোমার কাছে কত আশা, কত কল্পনা, কত কি বলতাম, অভিমান হ’লে কত কঁাদিতাম, আর তুমি হেসে উড়িয়ে দিতে --না হয় বিন্দ্রপ করতে, সে সব কথা তোমার মনে পড়ে সদানন্দ ? তা আর পড়ে না ? সে ত সেদিনকার কথা ; বোধহয় সাত-আট বৎসরের অধিক হবে না-কিন্তু বিদ্রুপ ত কখন করি নাই । আমার বােধ হ’ত যেন তুমি বিভ্রাপ করতে। যা হােক, তার পর যেদিন সে, আমার সব আশা ধূলিসাৎ করে দিল, অভিমানভারে দুজনেই