পাতা:শুভদা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

VG GtWy সঙ্কোচ করিত, সে হয়ত তাহাতে কারিত না ; অন্যকে যাহা মানাইত না তাহাকে হয়ত সেটা মানাইয়া যাইত। তাই স্বচ্ছন্দে আসিয়া সে ললনার হাত ধরিল। হাসিতে হাসিতে বলিল, আজ বুঝি ললনার তার সাদাদাদাকে লজ্জা হচ্ছে ? সদাপাগলাকে বুঝি লজ্জা করতে হয় ? হাত ছাড়িয়া দিয়া বলিল, কি কথা বলবে না ? সদানন্দর গলার স্বর, কথার ভাব এক রকমের । হাসিতে হাসিতেও সে অনেক সময় এমন কথা বলিত, যাহা শুনিলে চোখের জল আপনি উছলিয়া উঠে। তথাপি ললনা কথা কহে না । এবার সদানন্দ মুখ তুলিয়া নিতান্ত গম্ভীরভাব ধারণ করিয়া বলিল, কি রে, ললনা ? কিছু হয়েছে কি ? ললনা মুখ নিচু করিয়া চক্ষু মুছিয়া জড়িতকণ্ঠে বলিল, আমাকে একটা টাকা দাও । সদানন্দ পূর্বের মত, বরং আরও একটু উচ্চকণ্ঠে হাসিয়া বলিল, এই কথা ! এটা বুঝি আর সদাদাদাকে বলা যায় না ? কিন্তু টাকা কি হবে ? তখনও লজ্জা ৷ ললনা ইতস্ততঃ করিয়া লজ্জায় আরো একটু রক্তবর্ণ হইয়া বলিল, বাবা বাড়ি নেই। সদানন্দ ঘরের ভিতর ঢুকিয়া একটার পরিবর্তে পাঁচটা টাকা আনিয়া লালনার হাতে গুজিয়া দিয়া বলিল, মানুষের মত মানুষ হ’লে তাকে লজ্জা করতে হয়। পাগলকে আবার লজ্জা কি ? তাহার পর অন্যদিকে মুখ ফিরিয়া হাসিয়া বলিল, যখন কিছু প্রয়োজন হবে তখন ক্ষ্যাপা পাগলাটাকে আগে এসে বলে । কেমন বলবে তা ? লালনা দেখিল তাহার হস্তে অনেকগুলি টাকা গুজিয়া দেওয়া হইয়াছে। তাই বলিল, এত টাকা কি হবে ?