পাতা:শুভদা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ኪን”Sኃ একাদশ পরিচ্ছেদ তা হোক। তখন তুই ত বললি ললনা, সুসময় অসময় কার ঘরে নেই । তাই অসময়ে সুসময়ের কথা মনে রাখতে নেই । আবার যখন ভগবান মাপবেন তখন আবার সব হবে । তখন-এবার শুভদার চক্ষেও জল আসিয়া পড়িল । লালন কঁাদিতে কঁাদিতে চলিয়া গেল । অল্পক্ষিণ পরে ফিরিয়া আসিয়া জননীর পদপ্রান্তে একরাশি সজিনার পাতা ফেলিয়া দিয়া চক্ষু মুছিতে মুছিতে চলিয়া গেল । এখনও সন্ধ্যা হইতে বিলম্ব আছে। একজন ভিক্ষুক অনেকক্ষণ ধরিয়া বামুনপাড়ার একটি ক্ষুদ্র মুন্দির দোকানের একপার্থে চুপ করিয়া দাড়াইয়া আছে। দোকানটি ক্ষুদ্র। দুই-এক পয়সার খরিদ্দার ভিন্ন অন্য কেহ বড় একটা এস্থানে আসে না । কত লোক আসিতেছে ; এক পয়সার তৈল কিনিতেছে, দুই পয়সার ডাল কিনিতেছে, সিকি পয়সার লবণ কিনিতেছে তারপর চলিয়া যাইতেছে । এইরূপে কতক্ষণ কাটিয়া গেল, ভিক্ষুক কিন্তু কোন কথাই কহে না ; ক্রিয়-বিক্রয় দেখিতেছে ও দাড়াইয়া আছে। বহুক্ষণ পরে দোকানদারের চক্ষু সেদিকে পড়িল ; তাহার পানে চাহিয়া বলিল, তুমি, কি নেবে গা ? ভিক্ষুক মাথা নাড়িয়া বলিল, কিছু না । দোকানদার বিরক্ত হইয়া বলিল, তবে মিছে এখানে দাড়িয়ে ভিড় বাড়িও না । এই সময় একজন খরিদার বলিয়া উঠিল, ও বুঝি ভিক্ষে করতে এসেছে । দোকানদার অধিকতর বিরক্ত হইয়া বলিয়া উঠিল, যাও যাও এখানে কিছু মিলবে না। সন্ধ্যার সময় আবার ভিক্ষে কি ? লোকটা চলিয়া গেল। কিছুদূর গিয়া আবার ফিরিয়া আসিয়া