পাতা:শুভদা - শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়.pdf/৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

९gछी ومنا গলা জড়াইয়া ধরিল তাহা দেখিলে পাষণও গলিয়া যায়। সে আজ অনেক দিনের পর আপনাকে হারাইয়া ফেলিয়াছে ; অনেক সহ্য করিয়া ধৈৰ্য্যচ্যুত হইয়াছে তাই আজ তাহাকে সামলাইতে পারা যাইতেছে না। যে কখনও ক্ৰোধ করে না, সে ক্ৰোধ করিলে বড় বিষম হয় ; যে বড় শান্ত তাহাতে ঝড় উঠিলে বড় প্ৰলয়ঙ্করী হইয়া উঠে, তাই ললনা বড় বিপদে পড়িয়া গিয়াছে। কোনরূপে বুঝাইয়া উঠিতে পারিতেছে না যে এমন করিলে সে আর বরদাস্ত করিতে পরিবে না ; বুকখানা যদি ফাটিয়া বাহির হইয়া যায় তাহা হইলে ধরিয়া রাখিতে পরিবে না । গভীর রাত্রে মাতাপুত্রী সেইখানে লুটাইয়া লুটাইয়া ঘুমাইয়া পড়িল। শুভদার স্বামীর জন্য বড় ভয় হইয়াছে। আজ ছয় দিন হইল তিনি বাটী আসেন নাই। তাহার মনে হইতে লাগিল, বুঝি অপমানে ও লাঞ্ছনার ভয়ে তিনি আত্মঘাতী হইয়াছেন। অপদাৰ্থ বলিয়া কন্যা হইয়াও ছিলনা সেদিন যেরূপ অপমানিত করিয়াছিল, যেরূপ গঞ্জনা দিয়াছিল, তাহাতে আত্মঘাতী হওয়া আশ্চৰ্য্যের কথা নহে। সেই কথাই অষ্টপ্রহর মনে হইতেছে। আজও নিশা শেষে শুভদা চমকাইয়া উঠিয়া বসিল, ললনাকে তুলিয়া বলিল, ওরে তিনি নাই। ললনা ঘুমের, ঘোরে ভাল বুঝিতে পারিল না, মাতার মুখপানে চাহিয়া বলিল, কে মা ? আমি স্বপন দেখছিলাম যে তিনি আর নাই । কেন মা অমন করা ? কথা শেষ করিয়াই ললনা কঁাদিয়া ফেলিল । যতটুকু রাত্রি অবশিষ্ট ছিল তাহা দুজনে কঁাদিয়াই শেষ করিলেন। ক্ৰমশঃ বেলা বাড়িতে লাগিল । বেলা দশটা আন্দাজ সময়ে কৃষ্ণঠাকুরাণী স্নান করিয়া গৃহাভিমুখে যাইবার সময় পথিপার্থে মুখুয্যে বাটীতে একবার প্রবেশ করিয়া অঙ্গন হইতে ডাকিলেন, বৌ!