পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৪৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

নন্দিতা দৃঢ় কণ্ঠে বলে, মামা তোমার ভালই করেছে। তোমার মত ভাবুক ছেলেকে খোলাবাজারে ব্যবসায়ে নামাবার দায় দিলে, তুমি নিজেও ভুবতে, মামাকেও ডোবাতে। প্রেসটা চালিয়ে কোর্দানি দেখাও না ? তারপর নয় বড়বাজারে মাড়োয়ারী আর সায়েবদের সঙ্গে কম্পিটিশন চালাতে যাবে ? কুমার বলে, মেয়েরাও তোর চেয়ে ভাল হিসাব নিকাষ কষ্যতে পারে। সমু। সমর খানিকক্ষণ চুপ করে থাকে। ঃঃ আমি সাতদিন বাড়ি থেকে ঘর থেকে বেরোবি না । নন্দিতা প্ৰায় ধমকের সুরে বলে, ওসব প্রক্রিয়ায় আজকের দিনে কাজ হয় না। সমরেশ । ওসব যোগাভ্যাসের দিনকাল পার হয়ে গেছে । সাতদিন ঘরের কোণায় ভয় ভাবনা চিন্তা ধ্যান ধারনা চালিয়েই মর্ম কথাটা ধরতে পারবে -এরকম ধারণাই তোমার ভাবপ্রবণতার চরম প্ৰমাণ। তার চেয়ে সাতদিনের ছুটি নাও, এদিক ওদিক ঘুরে বেরিয়ে দেখে এসো-কাজ হবে। সমরেশ ধাতস্থ হয়ে হঁাকে, মহাদেব ! হাফ প্যাণ্ট হাফ সার্ট পরা সতের আঠার বছরের ছেলেটা এসে সোলাম ঠুকে বলে, জী ? সহরতলীর কোন এক পাটের কালে কাজ করে তার বাপের এক সহোদর ভাই-শুধু এইটুকু ভরসা করে মহাদেব সহরে এসেছিল। তাকে পথ থেকে কুড়িয়ে এনে প্রেসের ছুটকে কাজে লাগিয়ে দিয়েছিল ऊदांनी । একটা পয়সা ময়লা ধুতিটার খুটে ছিল না মহাদেবের। একটা পয়সা দু’চার দিনের মধ্যে পাওয়ার আশা ছিল না। কারও । তবু সে দশ টাকায় প্রেসের দারোয়ানগিরি। আর বয়গিরি করতে রাজী হয় নি—এত ছোট নতুন প্রেস। পনের টাকার জন্য জিদ ধরে আদায় করেছিল। সমরেশ হুকুম দেয়, চা ঔর চাপলে আও । Y9)