পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যায় । এটা অবশ্য সোজা সাধারণ হিসাব-গোড়ার হিসাব । খেলে আয় নিশ্বাস নিলে প্ৰাণী বঁাচে ওই ধরনের হিসাব । এটা ধরে নিয়েও মনকে পৃথক করে ধরে বিজ্ঞানের একটা বড় শাখা গড়ে উঠেছে। শরীরের ওপর মনের কর্তালি কম নয়। বেদনা পেলাম মনে, চোখ টাটিয়ে জল করতে লাগিল । ঃ দেহ আর মন পৃথক নয় বলছ ? : মোটেই পৃথক নয়।

প্ৰেম দেহগত না মনগত ?

দু’য়ে মিলে । দেহ দিয়ে প্ৰেম হয় না, সেটা পাগলের উদ্ভট কল্পনা । শুধু মন দিয়েও প্রেম হয় না-মানসিক ছ্যাবলামি। প্রেম হল দেহ,মন মিলে মিশে দৈহিক আর ওই দেহগত মনটার মামসিক যোগ বিয়োগ সৃষ্টি করা । জীবন জটিল হলে এ ক্রিয়াটাও জটিল হয় । প্ৰণতি চা এনে দিয়েছিল। মুখ বাকিয়েছিল নন্দিত । কাপ-ভরা চা যেমন ছিল তেমনি পড়ে থাকে, নন্দিতা কয়েকবার ওঠে বসে, জানালায় দাড়িযে এমনভাবে চুল খোলে যেন এই কাজটা করতে সে এ বাড়িতে qCሻf፭ማ | হঠাৎ ঘুরে দাড়িয়ে বলে, আমার মন যদি দেহ মনের ওই সম্পর্কের নিয়মটা মানতে না চায় ? আমার মন যদি বলে ষে জগৎ সংসার চুলোয় যাক সমরেশ বলে, আর বেশী ফেনিও না । বাড়ির প্রত্যেকে আমাদের কথা শুনছে। হলেই বা মনে প্ৰাণে একেলে, বেড়া ভাঙ্গার সাধ্য আছে ? দেখলে তো, বুঝলে তো, নিজের মনটা নিজের শক্তি দিয়ে বশে আনতে পারছি না। বলেই পাগলিনীর মত ছুটোছুটি করছি ? নন্দিতাকে শূল বেদনার রোগিনীর মতই সর্বাঙ্গ মুচড়ে মুচড়ে পাক খেতে দেখে আর অসহ্য যাতনায় কাতরাতে শুনে সমরেশ যথারীতি দুঃখিত হয়। ভাবে যে আগে তো এই উপসর্গ তার ছিল না । কী এই রোগ যা পিষে পিটিয়ে ককিয়ে কঁাদিয়ে প্ৰায় শেষ করে দিয়ে যায় ? ۲۹