পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৭৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সমরেশের আবেগ ও ভাবোচ্ছাসভায়া ভালবাসা তাই কি সে এমন অঙ্ক কৃতজ্ঞতার সঙ্গে মেনে নিয়েছিল ? বিচার বিবেচনা না করেই ? নির্মম হৃদয়হীন জগতে ব্যর্থতার অভিশাপ মাথায় নিয়ে দায় পালনের জীবন-পাত লড়াই চালাতে চালাতে তৃষ্ণায় এমনি কাঠ হয়ে গিয়েছিল তার বুক যে সুমিত্রার স্বতস্ফুর্ত ছেলেমানুষী হৃদয়া বেগ গোড়ার দিকে হেসে উড়িয়ে দিতে চেয়েও শেষ পর্যন্ত প্ৰায় কাতরভাবে গ্ৰহণ করেছিল ? তারও তবে আবেগ আছে, চােখকান বুজে ভাবের মানস তরীতে ভেসে যাবার ঝোক আছে ! দেখা একদিন হবে এটা জানাই ছিল। এতদিন ধরে এমন ভালবাসার খেলা চালিযে যাওয়ার পর একই সহরের এ পাড়ায় ও পাড়ায় দু’জনে তারা জীবন কাটাবে চিরকালের জন্য মুখ দেখাদেখি এড়িয়ে গিয়ে । তাও কি সম্ভব ? আত্মীয় বন্ধুর মারফতেই কত যে যোগসূত্র গড়ে উঠেছে দুজনের মধ্যে । অন্য অন্য সব যেমন ছিল তেমনি থাকবে, শুধু তাদের সম্পর্কের এইসব সুত্রগুলি রাতারাতি ছিড়ে যাবে । তাই হঠাৎ একদিন শ্ৰীতি এসে একটা বাজে আছিলায় তাকে রাত্রে খাওয়ার নিমন্ত্রণ করলে সে আশ্চর্য হয় না। শুধু ভাবে, গ্ৰীতির এত মাথা ব্যথা কেন তার জন্য ? অথবা এ দরদ সমরেশের জন্য ? শ্ৰীতি কি সত্যই বিশ্বাস করে যে সমরেশ তার দিকে ছাড়া আর কোন ৷ মেয়ের দিকেই তাকাবে না ? শ্ৰীতি বলে, একটু দেৱী করেই যেও । সমুর ফিরতে রাত হয়। সুমিত্রা বলে, কেন, আগে গিয়ে আপনাদের সঙ্গে গল্প করলে চলবে না বুঝি? YSen