পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সকালবেলা দু’একটা ইলিশ মাছ কিংবা দু’এক সের সন্দেশ দিয়ে আসতে দু’চার মিনিটের জন্য গেল, সে আলাদা কথা । সনাতনের কিংবা আত্মীয়ের ভুলতে পারে ও-সব কথা, ঝগড়াও তারা করতে পারে ওসব ব্যাপার নিয়ে, সমরেশ শুধু ইলিশ মাছ কিংবা সন্দেশ পৌঁছে দিয়ে দু’ একটা মিষ্টি কথার জবাব দিয়ে চলে আসবে । দেখা পাবার জন্য ভাবতে হবে না । সমরেশ একাই তো আর ইলিশ মাছ আর সন্দেশ উপহার দিতে যাবে না । সমরেশ একাই তো আর চেষ্টা করছে না লাভজনক কিছু বাগাবার জন্য । দু’চার মিনিটের জন্য দেখা দিতে, উপহার গ্রহণ করতে এবং দু’একটি মিষ্টি কথা বলতে ওরা সকলে প্ৰস্তুত হয়েই থাকবে। সমরেশ ওসব নিয়ে না গেলেই বরং ক্ষুন্ন হবে। ছুটির দিন সমরেশ বাড়ি ছেড়ে বার হয় না। ংসার চালানোর ব্যাপার নিয়ে প্রীতির সঙ্গে তার আজকাল চলে অবিরাম কলহ । কে জানত সমরেশের মনের খেদ এমনভাবে জমতে জমতে বোমার মত ফেটে পড়বে স্বাধীনতা দিবসের বিশেষ ছুটির দিনে । রান্নার সমারোহ করেছিল প্রীতি । কখন পয়সা বাগিয়েছে, কাকে দিয়ে বাজার করিয়েছে, কাকে দিয়ে সওদা আনিয়েছে সে-ই জানে। সকাল থেকে মহাসমারোহে শুরু হয়েছে বাড়িতে রান্নাবান্নার কাজ । কিছু জিজ্ঞাসা করার আগেই প্ৰীতি নিজে থেকে তাকে জানায, আরে না, যা ভাবছিস তা নয়। শুধু পোলাও আর মাংস করব-পাঁচ রকম ভাজি নয়, শুধু মাছ ভাজা । পাঁচ রকম ভাজাটাজা করে মাছের কালিয়া করতে আজকাল কত খরচ লাগে বুঝি না। আমি ? সব রকমভাজা বাদ, কালিয়া বাদ-শুধু-মাছভাজা । XyY62