পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ট্যাক্সি করে বৌদিকে তুলে নিয়ে গেলে ফেয়ার ট্রেনটা ধরতে পারব। নইলে সেই সন্ধ্যার গাড়ী। বাবা ওদিকে পাগল হয়ে গেছে ব্ৰততী মাথা হেঁট করেছিল। মহিমের হাত থেকে ছিটকে গিয়েছিল গড়গড়ার নল ।

বেয়াই পাগল হয়ে গেছে ?

দাদা তো সব খুলে লিখেছে চিঠিতে ? দাদার চিঠি পান নি ? হেঁট মাথা ব্রততী ব্লাউজের ভেতর থেকে খামের চিঠিটা বার করে এগিয়ে দিয়েছিল। বাপের নামের খামের চিঠি খুলেছে বলে নয়, সবাই খুলে থাকে বাড়ীর ঠিকানায় লেখা চিঠি। মহিমের সাংসারিক বা পারিবারিক জীবনে এমন কোন গোপনতাই ছিল না যে খামের চিঠি বেী ছেলে মেয়ে খুলে পড়লে তার অসুবিধা হত । পাচমাসের ছেলেটা ককাচ্ছিল বলে তার পুচিকে বালিসের নীচে খামটা গুজে দিয়ে সারাদিন ছেলে সামলাতে বিব্রত হয়ে থেকে চিঠির কথা ভুলে গিয়েছিল বলেও নয়। রাত্রে মহিম বাড়ী ফিরলে খেয়াল করে তাকে চিঠিটা দেয়নি বলেও নয় । সে যদি চমকে উঠে বলত, ওমা, চিঠিটা খোকনের বালিশের নীচে রেখেছিলাম-একেবারে ভুলে গেছি। জ্বর আমাশায় ভুগে ভুগে একেবারে শেষ করে দিলে খোকাটা আমায় । বলে, একবার কি দু’বার কপালটা চাপড়ে দিয়ে উঠে গিয়ে সে যদি ছেলের বালিশের তলা থেকে খামটা এনে মহিমকে দিত—মহিম শুধু মনে মনে আপশোষ করে ভাবত যে চাকরে জামায়ের হাতে মেয়েটাকে দিয়ে কি বিশ্ৰী রকম বোকামিই সে করেছে-মেয়েটা হয়ে গেছে ন্যাক । ট্যাক্সি নিয়ে বিরাম আসার পর বনমালী গোলমাল সুরু করলে সে ছেলের বালিশের তলা থেকে খামটা বুকের কাছে ব্লাউজের ভেতরে ঢুকিয়ে রেখেছিল । SS