পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

প্ৰণতির সন্ধান মেলে না, খবর মেলে । তার নিজের হাতের লেখা একখানা খামের চিঠি আসে-সে। ভালই আছে, সমরেশকে বিত্ৰত না করে নিজের ব্যবস্থা নিজেই করে নিয়েছে, তাৱ জন্য কেউ যেন চিন্তিত বা বিব্রত না হয়। একটা বিশেষ ধরনের চাকরী করছে। বাড়িতে থেকে এ চাকরী করতে অনুমতি পেত না-তাকে চাকরী করতে দিতে কেউ রাজী হত না। অগত্যা বাধ্য হয়ে কাউকে কিছু না জানিয়েই চাকরীটা সে নিয়ে নিয়েছে । তার জন্য কারো ভয় পাবার কোন কারণ নেই । সে একালের মেয়ে, নিজেকে সামলে চলতে শুধু জানে না, পারেও । প্ৰণতি ঠিকানা দেয় নি, শুধু পোষ্টাপিসের নামটা লিখেছে। জানিয়েছে তাকে চিঠি লিখতে হলে পোষ্টাপিসের কেয়ারে দিলেই চলবে-রোজ তাকে দু’বার পোষ্টাপিসে যেতে হয়, চিঠি পেতে অসুবিধা হবে না । শ্ৰীতি ও নন্দিতাকে সে চিঠিটা পড়ায়। দু’জনের আপত্তি অগ্ৰাহ করে প্ৰায় গায়ের জোরে দু’জনকে সঙ্গে টেনে নিয়ে ট্যাক্সি করে সকালবেল হাজির হয়। ওই পোষ্টাপিসে । প্ল্যাষ্টিকের একটা মোটা ভারি ব্যাগ ঝুলিয়ে প্ৰণতি পোষ্টাপিসে আসে। সাড়ে দশটার পর । তাদের দেখে কিছুমাত্র অপ্ৰতিভ না হয়ে কাছে গিয়ে বলে, আমি তাই ভাবছিলাম, পুলিসী হিসেব কষে পোষ্টাপিসে না এসে তোমরা পারবে না ! একটু বোসো, জরুরী কাজটা সেরে আসছি। তাদের চোখের সামনে সে ছ’জন নানা জাতের পুরুষ ও একজন মেয়ের পেছনে চিঠি ও পার্শেল রেজিষ্ট্রী করার কাউণ্টারের লাইনটার পিছনে দাড়ায়, দেড় ঘণ্টা পরে গোটা পনের ছোট বড় পার্শেল প্রৌঢ় বয়সী রেজিষ্ট্রেশনকেরাণীর নের্দেশ মত টিকিট এটি এটে জমা দিয়ে ফিরে আসে। RRC