পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/২৪০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

। ঃ উচিত কথা গরম হয়, করব কি ! প্রীতি নন্দিতাদের বাড়িতেই থাকে । ইংরাজী মাসের তিন তারিখে বিরাম তাকে মণিঅর্ডার করে খোরপোষের টাকা পাঠায়। খরচ নিতে নন্দিতার বাবা কোন আপত্তি করে না । কুমারকে বেশী মাইনের ভাল চাকরীতে লাগিয়ে দেবার পরেই ভবানী নন্দিতার কাছে হপ্তায় তিন দিনের বদলে সর্বদা তার বাড়িতে বাস করার দাবী জানিয়েছে এবং তাই নিয়ে তাদের মধ্যে একটা বিবাদ বাধার উপক্রম হতেই কুমারকে ডাকিয়ে তাকে মধ্যস্থ মেনেছে! এবং কুমার সমর্থন করেছে ভবানীকে । : চাকরীর খাতিরে ওর দিকে টানছ ? : না, এভাবে সপ্তাহে তিন দিন স্বামীর বাড়ি ঘিরে থাকার কোন মানে হয় না, উণ্টোটা বরং বেখাপ্পা হয় না-দু’চারদিন পরে বাপের বাড়ি গিয়ে একটা দিন থেকে আসা । নন্দিতা কিছুদিন সময় চেয়ে নিয়েছে। সে যে নতুন বইটা লিখছে সেটা শেষ করার পর নতুন ব্যবস্থা কি করা যায় সে বিবেচনা করবে। মিত্ৰাসাহেবের বাড়িতে সুমিত্রার চব্বিশ ঘণ্টার চাকরী-সে। কিন্তু অবসর বুঝে মিত্রসাহেবের বাচ্চ দুটোকে সঙ্গে করে দু’এক ঘণ্টা বাড়িতে কাটিয়ে যায়। কুমারের চেহারা আরও খারাপের দিকে যেতে থাকায় এবং চিকিৎসায় মোটা টাকা খরচ হতে থাকায় মেয়ের চাকরী নিয়ে পরের বাড়ি চব্বিশ ঘণ্টা পড়ে থাকাটা বোধ হয়, মনে মনে মেনে নিয়েছে। মেয়ে বাড়ি এলে আর গোমড়া মুখে চোখ পাকিয়ে তার দিকে তাকায় না, শান্তভাবে কথাবার্তা বলে । সুমিত্ৰা মাঝে মাঝে সমরেশের আপিসে গিয়েও হাজির হয়। নওজোয়ানদের আডিডায় অনায়াসে মিশ খেয়ে যায় । , কেউ কেউ তামাসা করে তাকে বলে, দেখলে মনে হয়। কিন্তু বাচ্চ দুটো আপনারি ! সুমিত্ৰ সঙ্গে সঙ্গে বলে, আমারি তো । খাওয়াই-দাওয়াই ঘুম পাড়াই -চব্বিশ ঘণ্টা দেখাশোনা করি। নিজের পেটের বাচ্চার জন্যও কোন মা এতটা করে না । ३७8