পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৪৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বাপের চেয়েও বনমালীর অভাবটা সমরেশ ঢের বেশী হাড়ে হাড়ে টের শায়। দায় ঘাড়ে নিয়ে দু’বছরেই প্ৰাণ থেকে রসকষ সব যেন শুকিয়ে গেছে। অ্যাকামি, ছেলেমানুষী তো কবেই ঝরে গিয়েছিল, এবার শুকিয়ে যাচ্ছে দেহমান। এখন মেরুদণ্ডটা না বেঁকে যায়। মট করে না ভেঙ্গে যায় । সাত ভাই চম্পার একটি বোন ছিল পারুল। বোন ডাক দিলেই সাত ভাই ঘুম ভেঙ্গে জেগে উঠে সাড়া দিত। মা আরেকটি বোন বিয়োতে পারলেই সে হয়ে যেতে পারত সাত বোনের এক ভাই সমরেশ । সাত বোন ডাকাডাকি করলে এক ভাই তাকেই কি ঘুম ভেঙ্গে জেগে জেগে সাড়া দিতে হত ? তাই তো মনে হয় ব্যাপার দেখে । চার বোনের বিয়ে মহিম চুকিয়ে দিয়ে গিয়েছিল, অভাবের কষ্ট কোনদিন সইতে হবে না। এরকম পরিবার এবং পাত্র দেখেই অনেক টাকা খরচপত্র করে বিয়ে দিয়েছিল । সুখে হোক দুঃখে হোক দু’বোন স্বামীপুত্রের সংসারে খেয়ে পরে বেঁচে বর্তে আছে । মাঝে মাঝে কারণে অকারণে দিদিদের কিম্বা ভগ্নীপতিদের চিঠিপত্রে সেটা জানা যায়। বিবাহিতা তিন নম্বর বােনটিকে তার স্বামী বিরাম ত্যাগ করেছে। কিম্বা হয়তো তার বোন সত্যিই ত্যাগ করে এসেছে বিরামকে । ব্যাপারটা ঠিক আন্দাজ করতে পারে না। সমরেশ । মহিম বেঁচে থাকার সময় বুঝবার কোন চেষ্টাই করেনি, দরকার ছিল না । গয়নাগাটি কেড়ে নিয়ে প্রীতিকে এক কাপড়ে ধাপের বাড়ীর দরজায় পেঁৗছে দিয়ে গিয়েছে শুনে রেগে টং হয়ে গিয়েছিল। পণ ধরেছিল, বিরামকে সে চাবকে আধমারা করে দিয়ে আসবেএকেবারে মারবে না । 8 to