পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ভাই ? একা আমি বাপের ঘরেই এগারটা মেয়েছেলের ঝনঝাট পেয়েছি घांफु ! কিশোরদের বলে, বদলে গেছি কেন ? তোমাদের সঙ্গে খেলি না কেন ? বড় হও, সংসার ঘাড়ে চাপুক তখন বুঝবে। সমরেশ খুব ভোরে ওঠে। প্ৰায় শেষ রাত্রে। যেদিন নিজে থেকে ঘুম ভাঙ্গে না, শ্ৰীতি তাকে তুলে দেয়। শ্ৰীতি ঘুমায় সবার শেষে। জাগে সকলের আগে। আজকাল মাঝে মাঝে সমরেশের মাঝ রাত্রে ঘুম ভেঙ্গে যায়, উঠে জলটল খেয়ে বেশ খানিকক্ষণ বইটই পড়ে। কসরৎ করে ঘুমোতে হয়। মাঝরাতে ঘুম ভেঙ্গে স্বচক্ষে শ্ৰীতিকে ঘুমোতে না দেখলে তার মনে খটকা থেকে যেত যে রাত্রে গ্ৰীতি সত্যি ঘুমায় কিনা ! ভোর রাত্রে ডাকাডাকি করে শ্ৰীতি তার ঘুম ভাঙ্গায় না। কাল ঘর থেকে ঘুরে এসে ভিজে হাতটি সমরেশের দু'চােখে বুলিয়ে কপালে রাখে। মৃদুস্বরে ডাকে, সমু ? আচমকা না জাগিয়ে আস্তে আন্তে তাকে জাগায় । হঠাৎ কাউকে জাগিয়ে দিলে তার নাকি অসুখ হয়। বিয়ের পর বছরখানেকের মধ্যে বোধ হয়। এসব নিয়মনীতি সে তার অপদার্থ স্বামীর কাছ থেকে শিখে এসেছে ! আগে তার এসব বাতিক ছিল না । বড় বোন। কিন্তু পিঠোপিঠি । ঠিক চোদ্দ মাসের তফাৎ তাদের বয়সের। ছেলেবেলা থেকে নাম ধরে ডেকে এসে দিদি বলাটা আর রপ্ত করা সম্ভব হয়নি ।

কনকনে শীতের ভোরে বরফের মত হাতটা ছোয়ালি ? ছ্যাক করে উঠেছে একেবারে ।

8