পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

এই বিরাট সংসারের দায় ঘাড়ে নিয়ে কি করে মহিম টিকিয়ে রেখেছিল। কারবারটা ? সে ভাবতে পারে না, কল্পনা করতে পারে না ব্যাপারটা । প্ৰায় ভরাডুবির অবস্থাতে এসে গেলেও কারবারটা কোন ম্যাজিকে সত্যি সত্যি চালু অবস্থাতে রেখে যেতে পেরেছে ? প্ৰথমে সত্যিই হেঁয়ালি মনে হয়েছিল। প্ৰায় যোয়ান বয়স থেকেই মহিমের বিশ্বস্ত অধীনস্থ বুড়ো বনমালী এ যাত্ৰা টি কে না গেলে বাপের ব্যবসা চালিয়ে যাবার আসল কৌশল চিরদিনের জন্য হেঁয়ালিই থেকে যেত সমরেশের কাছে । কারবারও খতম হত ছ’মাস কি ন’মাসের মধ্যে । একই রোগে ধরেছিল মহিম ও বনমালীকে । বয়সও দুজনের একই দশকের কোঠায় । বনমালীকেই বরং ঢের বেশী বুড়ো আর জীর্ণ শীর্ণ মনে হত তার বাবা fas CD (3 আজ সমরেশ বুঝতে পারে যে মহিমের ভুড়ি মোটা নাদুসনুদুস চেহারাটা আসলে ছিল ফ্ৰাপ-কারবারে দুরবস্থা অন্তত তার আহার বিহার ব্যায়াম বিলাসে ঘাটতি পড়তে দেয় নি । তারই কারবারের জন্য সারাজীবন কম খেয়ে বেশী খেটে বাচার লড়াই চালিয়ে আসার ফলে বনমালীর চেহারাটা দেখতে ঢের বেশী বুড়োটে হয়ে গেলেও হাড় তার শক্ত হয়েছিল বেশী । তাই যে রোগ বড় বড় ডাক্তার কবিরাজের পাহারা বসালেও তিন দিনে মহিমকে শেষ করে দিল, চোদ দিন সেই রোগে ভুগে সামান্য চিকিৎসাতেই বনমালী উঠল। সেরে । কলেজের আনাড়ি বুদ্ধি নিয়ে তার প্রায় বছর খানেক লেগেছে। কারবারট চালু থাকার হেঁয়ালি বুঝতে ।