পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

সব কথা খুলে বলতেই হবে, তোকেও বলি। জানাজানি তো হয়ে যাবেই। তবে সে পর্যন্ত গড়াবে মনে হয় না । ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করার কথা তুললেই তোদের ওই বিরামবাবু কেঁদে কেটে খোরপোষ দিতে রাজী হয়ে আপোষ করবে । সোজা ভাই-এর মুখের দিকে চেয়ে শ্ৰীতি আবার বলে, তোরা জানিস আমায় ওরা ত্যাগ করেছে, তাড়িয়ে দিয়েছে । আসল ব্যাপার মোটেই তা নয়। আমি নিজে চলে এসেছি। সইতে পারলাম না-কি কবব ? গয়না গাটিও কেড়ে নেয় নি-সাহস পাবে কোথায় ? সব বাক্সে তোলা আছে । একটা শুধু বোকামি করেছি, ওরা যা দিয়েছিল সেগুলো ফেরত দিয়ে এসেছি। মনটা কঁাচ ছিল তো, নিজের অধিকার বুঝতে শিখি নি। সমরেশ কথা কয় না। ঝুলানো জামার পকেট থেকে একটা বিড়ি এনে কাটার কাঠি ভেঙে উনানে জালিয়ে বিড়িটা ধরায়। উনান ধরাবার জন্য তার জামার পকেট থেকে দেশলাইট নিয়ে এসে শ্ৰীতি কোথায় রেখেছে কে জানে ? একটা দেশলায়ের দাম তিন পয়সা । অর্ধেকের বেশী খরচ হয়েছে । দেড় পয়সার মত একটা দেশলায়ের বাক্সের জন্য সে বোনের সঙ্গে কি কথা কাটাকাটি করা যায় যে বোন সম্রাট পুরুষদের পক্ষপুষ্ট তার স্বামীটিকে শুধু ডাক্তারি পরীক্ষার ভয় দেখিয়ে আইন খাটিয়ে খোরপোষ আদায় করতে চায় ? না খেয়ে মারা কত মানুষের মরণকে আইন-সন্মত ডাক্তারি পরীক্ষায় স্বাভাবিক রোগে ভুগে স্বাভাবিক মৃত্যু বলে ঘোষণা করা হয়েছে, সে খবর কি শ্ৰীতি রাখে না ? * একটুকরো রোদের ফালির ছোয়াচ লেগেছে যাদব বাবুদের তিনতলা বাড়ীর ছাতের আলসেয় রাখা টাবের ফুলের চারাগুলিতে । б. Ne