পাতা:শুভাশুভ - মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়.pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

শুনিবার ও বলবার ছাকা নীতিকথা ছিল না, অত্যন্ত বাস্তব প্রয়োজনীয় ব্যাপার ছিল । নিজের প্রাণটির জন্য বিশেষ ব্যবস্থা করতে তার দ্বিধা ছিল না । শ্ৰীতি তাকে বাইরে ডিম মাংস খেতে উপদেশ দিয়েছে-গ্ৰীতি জানে না যে গোড়ার দিকে তাই সে খেতি-বাড়ীর সকলকে বাদ দিয়ে এক এক ভাল জিনিষ খেতে বিশ্ৰী লাগিলেও খেতি । তার এত দায়, এত খাটুনি। বাড়ীর সবাই তো গায়ে ফু দিয়ে বেড়ায় । ভাল ভাল খাদ্য ওদেরও দরকার। কিন্তু তার দরকারের মত জরুরী নয় । আজকাল ওসব কিছু সে খেতেই পারে না । দোকানের মাংস দূরে থাক, চিন্তাজার তার একসঙ্গে দুটো হাফ বয়েল ডিম খাওয়ার ক্ষমতা পর্যন্ত হরণ করেছে । একটা ডিম খেয়ে সে আজকাল উদগার তোলে ! শ্ৰীতিও এটা জানে না । কারণ, বাড়ীতে খাওয়ার পাট একরকম সে তুলে দিয়েছে। সকলের দুর্ভাবনা দূর করার জন্য বিশেষভাবে ব্যাখ্যা করে বুঝিয়ে বলেছে, অসময়ে আমি আবোল তাবোল খেতে পারি না । দুপুরবেলা বাইরে খেতেই হবে, রাতে খিদে পেলে বাড়ীতে এসে খাব বলে খিদে চেপে কাজ করতে পারব না । বাইরে সকাল সকাল হোটেলে খেয়ে নেব, রাত্রে আমার জন্য শুধু আধ পো দুধ আর দু’খানা টেষ্ট রাখবে—শুতে শুতে খিদে পেয়ে যায় । প্রীতি বিশ্বাস করে নি, সংশয়ভরে বলেছে, বাইরে ছাই পাশ কি যে তুই খাস সে তোর ভগবান জানে-চেহারা যা হচ্ছে দিন দিন দেখে তো কান্না পায় । সমরেশ তাকে বুঝিয়েছে, সেটা খাটুনির জন্য। ዓ 8